অধিকাংশ গাছের পাতা সবুজ রঙের হয়, অন্যভাবে বললে সবুজ রঙের দেখায়। গাছের পাতা সবুজ দেখা যায় কারণ গাছের পাতায় ক্লোরোফিল (Chlorophyll) নামক একধরনের প্রাকৃতিক রঞ্জক পদার্থ (Pigment) থাকে। বাংলায় একে বলে পত্রহরিৎ।

শব্দগত অর্থ- ক্লোরোফিল শব্দটি দুইটি গ্রীক শব্দ থেকে নেয়া হয়েছে, Khloros যার অর্থ “সবুজ” এবং Phyllon যার অর্থ “পাতা”। এজন্য ক্লোরোফিলের শব্দগত অর্থ সবুজ পাতা।

চিত্র- অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যাচ্ছে ক্লোরোপ্লাস্টের মধ্যে ঘনীভূত অবস্থায় ক্লোরোফিল রয়েছে। ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে নেওয়া।

অবস্থান- প্রধানত পাতার মেসোফিল কলার কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট নামে একধরনের অঙ্গাণু থাকে। ক্লোরোপ্লাস্টের থাইলাকয়েড পর্দার মধ্যে ক্লোরোফিল থাকে।

আবিস্কার- সর্বপ্রথম ক্লোরোফিল আবিষ্কার করেন জোসেফ নিয়েনাইমে কাভেন্তো এবং পিয়েরে জোসেফ পেল্লেতিয়ের ১৮১৭ সালে।

ক্লোরোফিল সূর্যালোক থেকে শক্তি গ্রহণ করে। এ শক্তি ব্যবহার করে তারা পানিকে রাসায়নিক শক্তি, গ্লুকোজ বা প্রাকৃতিক চিনিতে রূপান্তর করে।

এগুলো গাছকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ফটোসিন্থেসিস বা সালোকসংশ্লেষণ।

এ প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিল আলোর দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্য (লাল) ও ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্য (নীল) শুষে নেয়। কিন্তু কিন্তু সবুজ আলো বাইরে প্রতিফলিত হয়। ফলে ঘাস ও পাতাকে সবুজ দেখায়।

ক্লোরোফিল সবুজ রং শুষে নেয় না। কারণ পাতার উপর যখন আলো পড়ে তখন রক্তবর্ণের হ্যালোব্যাকটেরিয়া সালোকসংশ্লেষণে যুক্ত হয়। পাতার রক্তবর্ণ ব্যাকটেরিওরহোডপসিন ব্যবহার করে সবুজ রঙে শক্তির সারাংশ ফেলে দেয়। ফলে সবুজ রং প্রতিফলিত হয়। আমরা পাতা সবুজ বর্ণের দেখি।

তবে পাতা তো সবুজ ছাড়া অন্য রঙেরও হয়। এই যেমন লাল, কমলা, হলুদ। আগেই বলা হয়েছে ক্লোরোফিল নামক প্রাকৃতিক পিগমেন্টে কারণে গাছের পাতা সবুজ হয়। কিন্তু ক্লোরোফিল যখন ভেঙে যায় তখন সবুজ ছাড়া অন্য রংগুলো প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পায়। তাই কোনো কোনো পাতা অন্য বর্ণেরও হয়।