1 min read
ইসলাম মানুষকে কেন ধনী হতে দেয় না?
ইসলাম মানুষকে কেন ধনী হতে বাধা দেয়? আমরা দেখতে পাই, ধনী দেশগুলো ইসলাম মানেন না। তবুও তারা অনেক সুখী। ইসলাম যদি এখানে কল্যাণ চাই তাহলে কেন ধনী হতে বাধা দেয়?
ইসলাম মানুষকে কেন ধনী হতে বাধা দেয়? আমরা দেখতে পাই, ধনী দেশগুলো ইসলাম মানেন না। তবুও তারা অনেক সুখী। ইসলাম যদি এখানে কল্যাণ চাই তাহলে কেন ধনী হতে বাধা দেয়?
একজন ব্যক্তির উদাহরণ দিয়ে শুরু করি। তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে।
হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) এর সম্পদ
সাহাবী হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) এর মারা যাওয়ার সময় মোট সম্পদ রেখে গিয়েছিলেন ১৩১৮৮ টন স্বর্ণ। কল্পনা করতে পারেন এগুলো বর্তমান বাজার মূল্য কত?
তখন উনার এই সম্পদের মূল্য ছিল ৩.১ বিলিয়ন ইসলামিক দিনার অর্থাৎ, স্বর্ণমুদ্রা।
১ ইসলামিক দিনার = ৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণ প্রতি কয়েনে।
বর্তমানের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির সম্পদ
বর্তমানের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি কে তা নিশ্চয় জানেন। তিনি ইলন মাস্ক। কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানেন?
একবার চিন্তা করে দেখেন কোথায় ৭৯১ বিলিয়ন ডলার আর কোথায় ২৬৮ বিলিয়ন ডলার!বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তির চেয়েও ৩ গুন ধনী ছিলেন এই সাহাবী!
ইসলাম কি মানুষকে ধনী হতে বাঁধা দেয়?
ইসলাম কোথাও সম্পদ অর্জন করতে নিষেধ করেনি। শুধু কিছু নিয়ম দিয়েছে। যেমন,
ব্যাস, এই দুটোই।
বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বের আইন দেখুন। আইন এরকমই। পার্থ্যক হচ্ছে,
কারন ইসলামে হালাল শব্দ দ্বারা বৃহৎ অর্থ প্রকাশ করে। যেমন, মদ বিক্রির টাকা হালাল নয়। কিন্তু অন্যায় ভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে উপার্জন হালাল নয়। শ্রমিককে নায্য পারিশ্রমিক না দিলে সেটা হালাল নয়। ইত্যাদি।
কিন্তু বর্তমান পৃথিবীর পুঁজিবাদের কাছে এসব কোনো ব্যাপারই না।
আরেকটা বিষয় এড করি।
ইসলাম হলো পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। পবিত্র কুরআনের কোথাও বলা নেই এটি মুসলিমদের জীবন বিধান। বরং বলা হয়েছে এটি সমগ্র মানবজাতির জন্য পাঠানো হয়েছে।
একজন মানুষ মুসলিম না হয়েও ইসলামের অনেক আইন মেনে চলতে পারে। যেমন, সত্য বলা, চুরি না করা, ঘুষ না নেওয়া, কাজে ফাঁকি না দেওয়া ইত্যাদি। এগুলো কিন্তু অমুসলিমরাও মেনে চলতে পারে।
ইসলমি অর্থনীতি:
অর্থাৎ, আমি বলতে চাইছি ইসলামের নিয়মগুলো অমুসলিম দেশগুলোও ফলো করতে পারে। ইসলামে অর্থনীতির অনেক বৈশিষ্ট আপনি অমুসলিম দেশগুলোতে খুঁজে পাবেন। তারা সেটা ফলো করে।
সেসব দেশে শ্রমের মূল্য দেয়, দূর্নীতি করে না, স্বজনপ্রীতি করে না। তারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে। ইসলামি অর্থনীতিওতো এগুলো শেখায়। সুতরাং তারা ইসলামের নিয়মগুলো অনেকাংশে ফলো করছে।
কিন্তু সব মুসলিম দেশ ইসলামি অর্থনীতি ফলো করে না। যেমন, বাংলাদেশের অর্থনীতিই দেখুন। এটিতো ইসলামি অর্থনীতি না।
বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলোর তালিকা:
কাতার ইসলামি অর্থনীতি থেকে শুরু করে ইসলামি আইন প্রায় পরিপূর্ণ অনুসরন করে। আর কাতার কততম ধনী রাষ্ট্র জানেন?
কি বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে? বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলোর তালিকা এখানে পাবেন। তালিকাটি একবার দেখে নিতে পারেন।
সুতরাং আশাকরি বুঝতে পেরেছেন যে, ইসলাম সম্পদ অর্জন করতে বাঁধা দেয় না। বরং উৎসাহ দেয়। কারন সম্পদ না থাকলে দান করবেন কিভাবে?
সম্পদ উপার্জনের জন্য একটি উপদেশ
গত সপ্তাতে Khuram Malik এর “Billion Dollar Muslim” বইটি পড়ছিলাম। সেখানে লেখক একটা কথা বলেছেন, যেটাতে একলাইনেই আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। তিনি বলেছেন,
উন্নত রাষ্ট্রের নাগরিকরা কতটুকু শান্তিতে আছে
শান্তি বিষয়টা অনেক বিষয়ের ওপরই নির্ভর করে। তবে আমরা একটা পরিসংখ্যাক দেখতে পারি। এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আত্মহত্যার রেটের একটি পরিসংখ্যান।
কেউ যদি অনেক শান্তিতে থাকে তাহলে আত্মহত্যার করার প্রবণতা কম থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই না?
সিঙ্গাপুর ২য় ধনী রাষ্ট্র। আত্মহত্যার দিক দিয়ে ৭৫ তম।
আমেরিকা ১১ তম ধনী দেশ। আত্মহত্যার দিক দিয়ে ৩০ তম।
কাতার ৪র্থ ধনী দেশ। আত্মহত্যার দিক দিয়ে ১৪৫ তম।
আরব আমিরাত ৭ম ধনী দেশ। আত্মহত্যায় ১৩৮ তম।
সৌদি আরব ২৯ তম ধনী দেশ। আত্মহত্যায় ১৩৩ তম।
ডেইলি মেইলের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুসলিমরা তাদের জীবন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সন্তুষ্ট। এখান থেকে পুরো রিপোর্টটি পড়তে পারেন। শুধু এটিই নয় এরকম অসংখ্য রিপোর্ট খুঁজে পাওয়া যাবে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের করা একটি গবেষণা খেয়াল করুন। এখানে ধর্ম ভিত্তিতে সুইসাইড রেট তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে মুসলিমদের মধ্যে সবচেয়ে কম পরিমান সুইসাইড করা হয়েছে।
অর্থাৎ, যদি দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম ধর্মের নিয়মকানুন কেউ পুরোপুরি মেনে চলে তবে সে অন্যদের তুলনায় অধিক শান্তিতে থাকবে। তাছাড়া ইসলামে আত্মহত্যা করা নিষিদ্ধ।
আশাকরি, আপনার উত্তর পেয়েছেন।