1 min read

আপনি কেন পরকাল বিশ্বাস করেন? এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারবেন?

মুসলমানদের যে বিশ্বাস পরকাল, আজ পর্যন্ত কি এটার কোনো ব্যাখ্যা আছে? না থাকলে কেন আধুনিক মানুষ তা বিশ্বাস করবে?

One thought on “আপনি কেন পরকাল বিশ্বাস করেন? এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারবেন?

  1. আপনার প্রশ্নটা পড়ে মনে হলো যে, প্রশ্নটা একটু ছোট পরিসরে হয়ে গিয়েছে। কারন শুধু মুসলমানরাই পরকালে বিশ্বাস করে না। খ্রিষ্টান, ইহুদী ও অসংখ্য ধর্মের অনুসারীরাই পরকালে বিশ্বাস করে।

    এবার আপনার প্রশ্নে আসি। প্রথমে বলে নেই পরকাল কেন থাকা উচিত সে বিষয়ে।

    পরকাল কেন থাকা উচিত?

    পৃথিবীতে প্রতিদিন খুন, ধর্ষন, রাহাজানি, চুরি, ছিনতাই, প্রতারণা ইত্যাদি খারাপ কাজ ঘটছে। কিন্তু সবাই কি ন্যায় বিচার পাচ্ছে?

    অবশ্যই না। কারন, যে অন্যায় করেছে সে হয়তো খুব ক্ষমতাশালী। তাই তার বিচার করতে পারেননি। অথবা, ঢাকা শহরের কোনো গলি দিয়ে হাটার সময় কেউ আপনার মানিব্যাগ ছিনতাই করলো। আপনি তাকে চিনেনই না। বিচার করবেন কিভাবে?

    আমি আর আমার বন্ধু ময়মনসিংহে পড়ার সময় কোচিংয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের দুজনকে পথ আটকে ছুরি ধরে সাথে থাকা টাকা পয়সা ছিনতাই করে। আমার বন্ধুর ফোনটিও তারা নিয়ে নেয়।

    আমরা তাদেরকে চিনি না। আর থানা পুলিশও করা হয়নি। এসবে যে দৌড়াদৌড়ি আর টাকা-পয়সা খরচ হবে তা ছিনতাই হওয়া টাকার চেয়ে বেশি। তাহলে আমরা কি ন্যায় বিচার পাব?

    আচ্ছা আমাদের কথা বাদ দেই। কারন আমরা অভিযোগ করিনি।

     

    Adolf Hitler saliendo de la sede del partido Nazi (Munich,… | Flickr

    এই লোকটাকে চেনেন? এডলফ হিটলার।

    যিনি ৬০ লাখ ইহুদীকে হত্যা করেছেন। উনার কি কোনো শাস্তি হয়েছে?

    তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। এটাকে যদি শাস্তি হিসেবে ধরি তাহলে হয়তো মাত্র ১ জনকে হত্যার শাস্তি কার্যকর হলো। বাকী ৫৯,৯৯৯ জন মানুষ তাদেরকে হত্যার ন্যায়বিচার কিভাবে পাবে?

    ধরলাম হিটলার গ্রেফতার হলো। তারপর তাকে সর্বোচ্চ কি শাস্তি দেয়া হতো?

    আদালত হিটলারকে মৃত্যুদন্ড দিত। কিন্তু এভাবেওতো মাত্র ১জন ব্যক্তি হত্যার শাস্তি কার্যকর হলো। তাহলে বাকী ৫৯,৯৯৯ জন মানুষ ন্যায়বিচার পেলো কি?

    অপরাধী মুসলিম বা অমুসলিম যাই হোক না কেন, তাকে তার কৃত কর্মের ফল ভোগ করতেই হবে। দুনিয়ায় না হলে আর কোথায় ভোগ করবে?

    হ্যাঁ, পরকালে। কারন সেখানে শুধু ন্যায় বিচারই হবে। কোনো পক্ষপাতিত্ব থাকবে না। আর আল্লাহ তায়ালা হিটলারকে ৫ কোটিবার শাস্তি দিতে চাইলে তাও সম্ভব।

    হিটলার একটা উদাহরণ মাত্র। প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের হিসাব পরকালে দিতে হবে। তাই অন্তত ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য হলেও পরকাল থাকা উচিত।

    এতক্ষণ অবৈজ্ঞানিক কথা বলবার কারন হলো, কেন পরকাল থাকা উচিত সেই বিষয়টি বুঝাবার জন্য।

    পরকাল সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

    পরকালকে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করার মতো অগ্রগতি এখনো বিজ্ঞানের হয়নি। বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে। একসময় বিজ্ঞান হয়তোবা পরকাল সম্পর্কে আমাদেরকে জানাতে পারবে।

    এই বিষয়টি বুঝার জন্য দুটি উদাহরন দেই চলুন।

    ১. বিজ্ঞানী নিউটনকে যদি কেউ বলতো যে, হাতের মধ্যে একটা ছোট্ট ডিভাইস নিয়ে সেটাতে সবকিছু করা যাবে। কেউ আমেরিকা বসে কিছু লিখলে সেটা বাংলাদেশে বসে সেকেন্ডের মধ্যেই পড়া শুরু করা যাবে।

    নিউটন নিশ্চয় লোকটিকে পাগল বলে উড়িয়ে দিতো।

    ২. আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলকে যদি বলা হতো, একসময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে কথা বলা যাবে। সে মানুষের মতো চিন্তা করতে পারবে। (যেমন, chatGPT এর সাথে মানুষের মতো কথা বলা যায়। ভবিষ্যতে এটি আরো উন্নতি করবে)

    তাহলে কি গ্রাহাম সাহেব সেটি হেসে উড়িয়ে দিতেন না? কারন আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কনসেপ্টটাই এসেছে ১৯৪০-১৯৬০ সালের মধ্যে।

    এরপর বিজ্ঞান সময়ের ব্যবধানে অনেক উন্নতি করেছে। নতুন নতুন বিষয় আমরা জানতে পারছি। তারমানে এই না যে বিজ্ঞান এখনই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। যদি তাই হতো তবে এখন আর বিজ্ঞানীরা দিনরাত ল্যাবে বসে পরিশ্রম করতেন না।

    সুতরাং, একজন বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমি কখনো পরকালের অস্তিত্ব অস্বীকার করতে পারি না। যেমন ব্ল্যাক হোলের ব্যাপারটা কয়েকশ বছর আগে কেউ জানতই না। কিন্তু ব্ল্যাকহোল কিন্তু ছিল। আমরা জানতাম না।

    একইভাবে আরো ৫০, ১০০, ৫০০ বা অধিক বছর পর হয়তো বিজ্ঞান পরকালের অস্তিত্ব আবিষ্কার করতে পারবে।

    মানুষকে পরকালে আবার জীবীত করা হবে কিভাবে?

    মানুষের দেহে একটা কোষ আছে। স্টেম সেল বলা হয় এটিকে। এর মধ্যে একটি DNA আছে যেটি Immortal মানে অমরনশীল। সেটি থেকেই পুনরায় মানুষকে সৃষ্টি করা সম্ভব।

    এবিষয়ে আমি কথা বাড়াচ্ছি না। ডাক্তার নাবিলের এই ভিডিওতে তিনি পুরো প্রক্রিয়াটা ব্যাখ্যা করেছেন। বিস্তারিত জানার জন্য আপনি ভিডিওটি দেখতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *