নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে?
1 min read

নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে?

একটা ওয়েবসাইট বর্তমানে খুবই দামি একটা সম্পদ। আজকের লেখাতে ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে তা নিয়ে আলোচনা করবো। কারণ, একটা সাইট করার আগে এসব বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন আছে।

ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা – Website requirements

বর্তমান সময়ে একটা ওয়েবসাইট খুবই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। একটা ভালো ওয়েবসাইট আপনার অর্থনৈতিক জীবন পরিবর্তন করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে৷ আপনি যদি একটু বর্তমান বিশ্বসেরা ধনীদের লক্ষ্য করে দেখেন। সহজে বুঝবেন কেন একটা সাইট তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ।

আমাজন, আলিবাবা, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি হচ্ছে দৃষ্টান্ত উদাহরণ। এদের জীবন পরিবর্তন করার জন্য একটা ওয়েবসাইট বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। ঠিক আপনাও জীবন পরিবর্তন করতে একটা ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।।।

অনলাইন স্টোর:

আমাজন ও আলিবাবা হচ্ছে বিশ্বের বহুল পরিচিত দুটি জনপ্রিয় অনলাইন স্টোর। আসলে বর্তমানে এদের স্টোর বলাটা ভুল হবে। বিশ্বাসের সবকিছুই পাইকারি ও খুচরো দামে পাওয়া যায় এসকল অনলাইন স্টোরে। সুতরাং বলা যায় এগুলো হচ্ছে একেক মার্কেট বা বাজার।

সোস্যাল মিডিয়া কমিউনিটি –

ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি সাইটগুলো হচ্ছে বাস্তব উদাহরণ। বর্তমানে এসকল সাইটের উপর নির্ভর করে হাজার হাজার পরিবার তাদের পরিবারের প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করছেন।বাংলাদেশে ফেসবুক ও ইউটিউব কিছুদিনের জন্য বন্ধ করা হলে হাজার হাজার পরিবার অর্থ সংকটের সম্মুখীন হবেন। এটা শুধু বাংলাদেশ না। বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের মধ্যে এমন অনেকগুলো পরিবার এগুলোর উপর নির্ভর করে থাকে।

ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা
ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা

এর মূল কারণ হচ্ছে। এরা অনলাইনে বিজনেস করে। ব্যবসা করার জন্য এসব ওয়েবসাইট ব্যবহার করে তারা তাদের পণ্য ও সেবার প্রচার করেন এবং বিক্রি করেন। যদি কোনো কারণে এসব প্লাটফর্ম বন্ধ হয়ে যায়। পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ বেকার হয়ে যাবে। এজন্যই আমাদের সবার জন্য ওয়েবসাইট প্রয়োজন।

আমার সাইট কি আমাজন ও ইউটিউবের মতো হতে পারবে?

কেন হতে পারবে না? অবশ্যই হতে পারবেন। আমাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে। আমাজন, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদি সাইটগুলোর বর্তমান মূল্য অনেক। আমি যদি একটা ৫ হাজার টাকা খরচ করে সাইট করি। তার মূল্য কি আর এদের মতো হবে? আসলে এমন চিন্তা আপনার জন্য নেগেটিভ বিষয় নিয়ে আসবে।

আপনাকে পজিটিভ চিন্তা করতে হবে। এরাও যখন তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করেছিল। তখন তার মূল্য ছিল ৫ হাজার টাকার। কিন্তু এখন গিয়ে যদি আপনি বলেন, আমাকে ৫ হাজার মিলিয়ন ডলার দিয়ে আমাজন বিক্রি করে দেন। আপনার কি মনে হয় বিক্রি করে দেবে! 🤔

না। কখনও বিক্রি করবে না। কারণ, তারা বর্তমানে প্রতিমাসে তার থেকে বেশি টাকার ব্যবসা করছে। তাদের এতো সফলতা একদিনে আসেনি। এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক দিন। যত ভালো কাজ করবেন, ততই আপনার পজিশন উন্নত হবে।

ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে?

চলুন, এবার বহুল অপেক্ষিত সেই প্রশ্নের উত্তর জেনে নিই। সাধারণত ডোমেইন, হোস্টিং ও থিম।এই ৩টি মৌলিক উপাদান থাকলে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। তবে আপনার বিজনেসের ধরন ও চাহিদা অনুযায়ী আরও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ টুলসের প্রয়োজন হতে পারে।

ডোমেইন কি?

ডোমেইন হচ্ছে একটা ওয়েবসাইটের নাম ও এড্রেস। যেমন bdbloq হচ্ছে আমাদের ওয়েবসাইটের নাম। যখন কেউ আমাদের সাইটে ভিজিট করতে চাই। তখন তিনি আমাদের সাইটের নাম লিখে সার্চ করে। এবং bdbloq.com এড্রেসের মাধ্যমে আমাদের সাইটে ভিজিট করে।

ডোমেইনের সাথে একটা এক্সটেনশন থাকে। এটা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমন- .com .net .org .info ইত্যাদি। এক্সটেনশন অনুযায়ী ডোমেইনের মূল্য বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। এবং এদের নির্দিষ্ট কিছু অর্থ রয়েছে। এজন্য বিভিন্নরকম ডোমেইন পাওয়া যায়।

হোস্টিং – ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে

সাইটের সকল ডাটা জমা রাখার জন্য একটা হোস্টিং প্রয়োজন হয়। হোস্টিং হচ্ছে মেমোরি কার্ডের মতো একটা জায়গা। সেখানে ওয়েবসাইটে আপলোড করা টেক্সট, ছবি, ভিডিও, অডিও সহ অন্যান্য সকল তথ্য জমা রাখা যায়।

অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কারণে হোস্টিংয়ের ডাটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা হ্যাক হতে পারে। এজন্য প্রতিটি ওয়েবসাইটের একটা সিকিউর ব্যাকআপ গুরুত্বপূর্ণ। হোস্টিং ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত কোম্পানি বাঁচাই করা প্রধান কাজ। যেকোনো কোম্পানির হোস্টিং সেবা ব্যবহার করলে পরবর্তী বিভিন্ন সমস্যা দেখা যেতে পারে।

যেমন- হ্যাক হওয়া, ডাটা ডিলিট হয়ে যাওয়া, তথ্য চুরি, সাইটের স্পীড কম, ইত্যাদি।

বিশ্বস্ত ও মানে উন্নত কিছু ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি –

Namecheap: কম বাজেটের মধ্যে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য নেমচিপের ডোমেইন হোস্টিং সেবা খুবই ভালো। আমি নিজেও আমার প্রথম ওয়েবসাইট নেমচিপে হোস্ট করেছিলাম। বর্তমানেও অনেকগুলো সাইট নেমচিপে হোস্ট করা।

নতুনদের জন্য অত্যেন্ত ভালো একটা ডোমেইন হোস্টিং সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। নেমচিপ সবার কাছে জনপ্রিয় হওয়ার একমাত্র সিক্রেট হচ্ছে। কম বাজেটে সেরা সার্ভিস প্রদান করতে সক্ষম। সাপোর্টের বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা থেকে সেরা বলতে পারি। আমি অনেক সময় একটা ৪ ঘন্টার বেশি সাপোর্ট নিয়েছি৷

Namecheap Domain Hosting Plans And Pricing

HostGator: খুবই পুরাতন একটা কোম্পানি। এটি সবাই চিনেন। ডোমেইন ও হোস্টিং সেবা দিতে এরা এক্সপার্ট। এদের আসলেই এই সেক্টরে অনেক বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। এজন্যই এরা গ্রাহক কি চাই৷ তারা তা খুব সহজে বুঝতে পারেন।

একটা সাইট তৈরির জন্য আপনার বাজেট যদি মোটামুটি ভালো থাকে, তাহলে হোস্টগেটর আপনার জন্য উপযুক্ত কোম্পানি হতে পারে। এখানে ওয়ান ক্লিক ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টলেশন সুবিধাও রয়েছে।

HostGator Domain Hosting Plans And Pricing

Bluehost: এটিও এক অসাধারণ সার্ভিস প্রভাইডার৷ আমি এখানে যে তিনটি কোম্পানির সন্ধ্যা দিলাম। এই তিনটি কোম্পানি আমাদের রিসার্চ তালিকায় সেরা। দেশে এবং বিদেশে আমার অনেকগুলো ক্লায়েন্ট রয়েছে। যেহেতু আমি ওয়েবসাইট তৈরি ও এসইও বিষয়ে সার্ভিস সেল করি। তাই আমার একাধিক ক্লায়েন্টদের কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে এই তিনটি কোম্পানিকে টপে নির্বাচন করি।

Bluehost Domain Hosting Plans And Pricing

আপনি নিজের পছন্দের যেকোনো কোম্পানির সেবা নিতে পারেন। এটা নির্ভর করে আপনার উপর। কোনো কোম্পানি কে খারাপ আমি বলতে পারি না। সবাই ভালো। কিন্তু গ্রাহকদের সবাই ভিন্ন কিছু দিয়ে মন জয় করতে তার মধ্যে আরও ভালো এই তিনটি কোম্পানি।

আমি যেহেতু বাংলায় আর্টিকেল লিখছি৷ তাই অনেক পাঠকরা বাংলাদেশের ভালো ডোমেইন ও হোস্টিং সেবা প্রদানকারীদের সন্ধান চাইবে। আমি কখনও আমার দেশের সেবা প্রদানকারীদের ছোট করতে চাই না। অনেকের কাছ থেকে বাংলাদেশের ক্লায়েন্টের জন্য হোস্টিং কিনে ধোঁকা খেয়েছি।

তবে যাদের ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির সেবা নিতে সমস্যা, তাদের জন্য বাংলাদেশের কিছু সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সন্ধান দিচ্ছি। যাদের সেবা মোটামুটি ভালো ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে এমন কোম্পানির নাম দেব –

  • Hostever
  • Host Seba
  • Cyber Developer BD

থিম –

একটা ভালো থিম সাইটের জন্য মৌলিক উপাদান। যদি আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করেন, তবে আপনি চাইলে অনেকগুলো থিমস ব্যবহার করতে পারবেন। ফ্রি থিমের একটা অসুবিধা হচ্ছে। এক্ষেত্রে থিম ফাইল সঠিকভাবে অপটিমাইজ করা থাকেনা। এবং সবকিছু ইচ্ছে মতো ডিজাইন ও অপটিমাইজ করা যায় না। তবে ক্রাক ও নাল থিম ব্যবহারের চেয়ে ফ্রি থিম ব্যবহার করায় ভালো।

পেইড থিম ক্রয় করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটা রেসপন্সিভ ও হাই স্পীডে লোড হয় এমন থিম পছন্দ করুন। পেইড যেকোনো ধরনের থিমস ও টুলস ক্রয় করার জন্য “থিম ফরেস্ট” হলো এক অনন্য কোম্পানি। যা চাইবেন তা পাবেন।

Themeforest Themes And Pricing

আলোচিত এই তিনটি উপাদান থাকলে আপনার একটা ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। এগুলো হলো সাইটের জন্য মৌলিক উপাদান। তবে আপনার চাহিদা অনুযায়ী আরও বিভিন্ন ফিচার ও সেবা যুক্ত করার জন্য আপনাকে প্লাগিন ব্যবহার করতে হবে।

প্লাগিন হলো এমন টুলস। যা ব্যবহার করে কোনো ঝামেলা ছাড়া যেকোনো ডিজাইন ও ফিচার আপনি ওয়েবসাইটে যুক্ত করতে পারবেন। যেকোনো প্লাগিনসও আপনি “থিম ফরেস্ট” ওয়েবসাইটে পাবেন।

Themeforest Plugins And Pricing

ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে –

আপনাদের কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে এতক্ষণের আলোচনায়। আশাকরি, আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পেরেছি। যদি আরও কিছু জানার থাকে, নিচের কমেন্ট বাক্সে গিয়ে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *