Google Assistant: কিভাবে গুগল এসিস্ট্যান্ট কাজ করে!
আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কিভাবে গুগল এসিস্ট্যান্ট যেকোন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যায়। গুগল এসিস্ট্যান্ট বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ ওয়্যারলেস স্পিকার, স্মার্ট ডিভাইস এবং মোবাইল গুলোতে ব্যবহারের সাথে সাথে Google Home speaker বাড়িতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গুগল এসিস্ট্যান্ট যে কাজগুলো করতে পারে তা অবিশ্বাস্যভাবে বৈচিত্রময়। শক্তিশালী ভয়েসের মাধ্যমে আপনার যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে শুরু করে, আপনার ইমেল এবং অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলিও যাচাই করতে সক্ষম।
এটি নতুন কিছু শিখতে এবং আপনার আদেশ পালন করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধি ব্যবহার করে, এজন্যই এটি বেশি কার্যকারী ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এছাড়াও, আপনার বাসা বাড়িতে যতরকমের স্মার্ট ডিভাইস রয়েছে তাদের সাথে যুক্ত করার মাধ্যমে। উক্ত স্মার্ট ডিভাইস গুলোকে সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সুতরাং, আপনি যদি গুগল এসিস্ট্যান্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন হন, তাহলে প্রতিটি পরিস্থিতিতে গুগল এসিস্ট্যান্ট কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে আমার গাইডলাইন সম্পূর্ণ পড়ুন।
গুগল এসিস্ট্যান্ট কি?
গুগল এসিস্ট্যান্ট হচ্ছে গুগলের ভয়েস সহায়ক। এবং এটি স্মার্টফোন এবং স্মার্ট হোম ডিভাইসের জন্য ডিজাইন করা। এটি এমন একটা ডিভাইস যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত, এবং এটি আপনাকে তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে যেকোনো পরিস্থিতিতে সাহায্য করতে পারেন।
গুগল এসিস্ট্যান্ট কি রকমের ডিভাইসে সাপোর্ট করে?
গুগল এসিস্ট্যান্ট কেবলমাত্র স্মার্টফোনে, Google Home Mini, Google Home Max – এবং স্মার্ট ডিসপ্লে গুলোতে, যেমন: Google Home Hub and Google Next Hub Max ইত্যাদিতে সাপোর্ট করে। এমনকি এটি Sonos One speaker, Ticwatch E2 smartwatch, এবং এমনকিছু গাড়িতেও এটি সাপোর্ট করে।
যদিও আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই স্পিকার বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে গুগল এসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করতে পছন্দ করি, তবে আপনার স্মার্ট বাড়ি নিয়ন্ত্রণের জন্য এই ডিভাইসটি যেকোনো স্মার্ট ডিভাইসের সাথে কানেক্ট করা যাবে এবং ডিভাইসগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। এটি কখন ব্যবহার করা যাবে, আর কখন ব্যবহার করা যাবে না তার কোন সীমাবদ্ধতা নেই। আপনার যখন ইচ্ছে, তখন ব্যবহার করতে পারবেন।
ফোনে গুগল এসিস্ট্যান্ট কিভাবে সেট-আপ করবেন?
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সাথে গুগল ইতিমধ্যে গুগল এসিস্ট্যান্ট কানেক্ট করার টুলস সেট করে দিয়েছে৷ কারণ, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম গুগল থেকে ডেভেলপ করা।
আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ৫.০ বা এর থেকে বেশি ভার্সনের মোবাইল ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি সহজে গুগল এসিস্ট্যান্ট কানেক্ট করতে পারবেন। এটি সহজে কানেক্ট করার জন্য গুগল এসিস্ট্যান্টকে বলুন “Ok Google”. তাহলে গুগল নিজে নিজেই কানেক্ট করে নিবে। এরপর আপনার ইচ্ছে মতো প্রশ্ন করুণ বা যেকোনো কমান্ড দিতে পারবেন এবং সাথে সাথে আপনি সব কমান্ডের উত্তর পাবেন। আপনি যখনি গুগল এসিস্ট্যান্ট অ্যাপ খুলবেন, তখনি এটি ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
আপনি যদি Pixel 2, Pixel 3, এবং Pixel 3A মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে আপনি অটোমেটিক গুগল এসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার যদি আইফোন থাকে, তবে আপনাকে প্রথমে “অ্যাপ স্টোর” থেকে “Google Assistant” অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করতে হবে এবং যতবারই আপনি গুগল এসিস্ট্যান্টকে আদেশ দিতে চান বা কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চান, ততবারই অ্যাপটিতে প্রবেশ করে প্রশ্ন করতে হবে।
গুগল এসিস্ট্যান্টের সাথে আপনার জীবনকে আরও উন্নত করার বেস্ট উপায়:
মনে করুন, আপনার প্রতিমাসের ৫,৭,১৯ তারিখে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তিনটি প্রোগ্রাম করতে হয়। কিন্তু অন্যান্য কাজের জন্য আপনি সেই প্রোগ্রামগুলোর তারিখ ও সময় ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাহলে আপনি গুগল এসিস্ট্যান্টকে বলে রাখতে পারেন। যেন প্রোগ্রামের তারিখ ও সময় আসলে আপনাকে বলে দেয়। গুগল এসিস্ট্যান্ট এসবকিছুর হিসাব রাখতে সক্ষম। এবং এটি আপনার ব্যক্তিগত জীবনের সবকিছুর হিসাব রাখতে পারে। আপনি যদি কখনও ভুলে যান যে, আপনার প্রোগ্রামের দিনটি কখন? তাহলে আপনি গুগল এসিস্ট্যান্টকে প্রশ্ন করতে পারেন। ভুলে গেলে যাচাই করার জন্য গুগল এসিস্ট্যান্টকে প্রশ্ন করুন, আপনার পরবর্তী ইভেন্ট বা প্রোগ্রামটি কখন? আপনি প্রশ্ন করার সাথে সাথে গুগল এসিস্ট্যান্ট তার উত্তর খোঁজে দিতে পারবে।
আপনি চাইলে পরবর্তী দিনের সকল কাজের সময়সূচীও তৈরি করে রাখতে পারেন, এবং সকালে উঠলে গুগলকে আপনার আসন্ন দিন সম্পর্কে প্রশ্ন করলে আপনাকে গুগল সবকিছু বলে দেবে। গুগল এসিস্ট্যান্টের সবচেয়ে সুবিধাজনক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বিনামূল্যে যেকোনো কাজের তালিকা তৈরি করার ক্ষমতা।
এটিকে ব্যবহার করার জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হ’ল:
প্রথমে তাকে বলে রাখতে হবে। যেমন: ” হাই গুগল! আমাকে আজ সন্ধ্যা সাতটায় মাকে ফোন করার জন্য মনে করিয়ে দিও”, তাহলেই আপনার কাজ শেষ। এখন গুগল এসিস্ট্যান্ট আপনাকে সময়ের আগেই মনে করিয়ে দেবে আপনার মাকে কল করার জন্য। সত্যি জীবনকে সহজ করার জন্য গুগল এসিস্ট্যান্ট খুবই মূল্যবান একটি ডিভাইস। তাই আজকেই সংগ্রহ করুন একটি “Google Home Mini” বাংলাদেশ থেকে ক্রয় করতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনার বাড়িকে আরও স্মার্ট করতে ব্যবহার করুন গুগল এসিস্ট্যান্ট:
Google Assistant এর জনপ্রিয় কাজগুলোর মধ্যে একটি সেবা হচ্ছে, আপনার বাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করা। এটি আপনার বাড়ির কাজগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আপনার বাড়িকে একটি স্মার্ট বাড়িতে পরিবর্তন করে। সময় মতো আপনার বাড়ির টিভি, বাল্ব এবং পাখাসহ আরও যতপ্রকার স্মার্ট ডিভাইস রয়েছে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে গুগল এসিস্ট্যান্ট। এটির মাধ্যমে আপনার এসি ও ফ্রিজকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এককথায়, আপনার বাড়িকে একটি স্মার্ট বাড়িতে পরিবর্তন করতে গুগল এসিস্ট্যান্ট এর ভূমিকা অতি প্রয়োজন।
গুগল এসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে আপনার বাড়ির কাজ করার জন্য আপনার স্মার্ট ডিভাইসগুলোকে Google Assistant এর সাথে সেট আপ করতে আপনাকে একটি স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট ব্যবহার করতে হবে। এবং আপনি চাইলে আপনার বাড়ির প্রতিটি স্মার্ট ডিভাইসের একেকটি ডাক নাম সেট করতে পারেন। আপনার বাড়িতে যদি প্রচুর স্মার্ট ডিভাইস থাকে এবং যদি চান সবগুলো ডিভাইসকে গুগল এসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে। তাহলে আপনি প্রতিটি ডিভাইসের জন্য একটি করে ডাক নাম সেট করার মাধ্যমে আরও বেশি দক্ষতার সাথে আপনার সব ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
মনে করুন, গুগল এসিস্ট্যান্টকে আপনি আপনার বাড়ির বাল্বের সাথে কানেক্ট করেছেন। এখন আপনি অফিসে থাকা অবস্থায় চাইলে আপনার বাড়ির বাল্ব বন্ধ করতে পারেন এবং চাইলে জ্বালাতে পারেন। এভাবে আপনার বাড়ির টিভি, ফ্রিজ, হিটার, গিজার এবং স্মার্ট দরজাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। সুতরাং, আপনি বুঝতেই পারছেন কেন GOOGLE ASSISTANT আপনার স্মার্ট বাড়ির জন্য প্রয়োজন। গুগল এসিস্ট্যান্ট বাড়িতে ব্যবহার করতে দুইটি জনপ্রিয় কন্ট্রোলার স্পিকার নিচের লিংকগুলোতে দেখতে পারেন।
- Google home mini white
- Home mini white
আপনার বাড়িতে যদি স্মার্ট ডিভাইস কম থাকে, তাহলে আপনি গুগল হোম মিনি – ওয়্যারলেস হোম কন্ট্রোল এবং ভয়েস কন্ট্রোলটি দেখতে পারেন।
- Google Home Max
- Home max
আপনার বাড়িতে যদি স্মার্ট ডিভাইস বেশি থাকে, তাহলে আপনি Google Home Wireless Voice Activated Speaker – White/Slate Fabric টি দেখতে পারেন।
Google Assistant এর মাধ্যমে সংগীত ও গান বাজানো:
গুগল এসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করে সঙ্গীত ও গান বাজানোর জন্য কয়েকটি ডিভাইস:
- Google Home Mini
- Google Home Max
- Google Home Hub এবং
- Google Next Hub Max
এগুলোর মতো নির্মিত গুগল এসিস্ট্যান্টসহ একটি স্মার্ট স্পিকার বা স্মার্ট ডিসপ্লে আপনার দরকার। আপনার Google Assistant Smart Speaker এ সংগীত শুনতে আপনার কেবল “ওকে গুগল” বলতে হবে এবং ভয়েস সহকারীকে একটি আদেশ দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি Google Assistant Smart Speaker কে প্রথমে বলবেন “ওকে গুগল”, তাহরে সে কাজ করতে প্রস্তুত হয়ে যাবে। এবং পরে বলবেন সংগীত বাজনোর জন্য। এবং আপনি চাইলে আপনার পছন্দের নির্দিষ্ট কোন সংগীতও বাজাতে বলতে পারেন।
আপনার যদি একাধিক গুগল এসিস্ট্যান্ট-সামঞ্জস্যপূর্ণ স্মার্ট স্পিকার থাকে, তবে আপনি প্রতিটি স্পিকারে এক সাথে সঙ্গীত বাজিয়ে আপনার পুরো বাড়িকে শব্দ দিয়ে পূর্ণ করতে পারেন – এর জন্য আপনার স্পিকার গুলোকে কেবল একই ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
গুগল এসিস্ট্যান্ট এর মাধ্যমে আপনার টিভি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
আপনি নিজের পছন্দের কোন নাটক বা মুভি যা দেখেন না কেন, আপনি আপনার টিভি হাত ছাড়া-ফ্রি নিয়ন্ত্রণ করতে Google Assistant ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আপনার স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা গুগল হোম স্পিকারকে কমান্ড দিয়ে আপনার টিভি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
আপনার কাছে অ্যান্ড্রয়েড টিভি থাকলে, গুগল এসিস্ট্যান্টকে আদেশ দেওয়ার জন্য আপনার সরাসরি আপনার রিমোট কন্ট্রোলের সাথে কথা বলতে সক্ষম হওয়া উচিত। যদি আপনার রিমোট কন্ট্রোলটিতে মাইক্রোফোন না থাকে, আপনাকে আপনার স্মার্টফোনটিতে অন্তর্নির্মিত Google Assistant বা Google Home স্পিকারকে এই আদেশগুলি দিতে হবে। এভাবে আপনার বাড়ির টিভি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন কোনরকম হাতের স্পর্শ ছাড়া। গুগল এসিস্ট্যান্ট সম্পর্কে আরও জানতে আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন নিচের কমেন্ট বক্সে ব্যবহার করে।