মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি: অভিজ্ঞতা ও বিনিয়োগ লাগবে না
মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার পরিপূর্ণ গাইডলাইন আজকের আর্টিকেলে শেয়ার করবো। বিডিব্লগ সবসময় পাঠকদের জন্য অসাধারণ কিছু করার চেষ্টা করে। ঠিক একইভাবে আজকে প্রিয় পাঠকদের জন্য মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার গাইড শেয়ার করবো। শুধুমাত্র ওয়েবসাইট তৈরি নয়। পাশাপাশি আপনাদের শেখাবো কিভাবে আপনার তৈরি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন থেকে অর্থোপার্জন করবেন।
মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি আজও কি সম্ভব?
জ্বি! হ্যাঁ! অবশ্যই সম্ভব। আমাদের দেখানো গাইডটি অনুসরণ করুন। সম্পূর্ণ ধাপগুলি শেষ হলে আপনার একটা ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে যাবে। কথা যেমনটা বলেছি। কাজটাও ঠিক তেমনি হবে।
মোবাইল দিয়ে সাইট তৈরি করে এই সাইটের মাধ্যমে কিভাবে গুগল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করা যার। তার সিক্রেট বিষয়গুলো আপনাদের বলে দেব।
কিভাবে মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈ করা হবে?
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকে এমন একটা জনপ্রিয় প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সাইট তৈরি করবো। যেন আমাদের কাজগুলো মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব হয়। বর্তমানে সিস্টেম আপডেটের কারনে সবগুলো সফটওয়্যার দিয়ে মোবাইল দিয়ে কাজ করা সম্ভব হয় না। এজন্য আমরা এমন একটা সফটওয়্যার দিয়ে সাইট তৈরি করবো। যেটা দিয়ে খুব সহজে মোবাইল দিয়ে কাজ করা যাবে। পাশাপাশি এটা একটা সবার জনপ্রিয় প্লাটফর্ম।
হ্যাঁ, ঠিক। এটা হচ্ছে গুগলের একটা ফ্রি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার। এটা সবার কাছে ব্লগার ও ব্লগস্পট নামে পরিচিত। এই ফ্রি প্লাটফর্ম ব্যবহার করে অসাধারণ সুন্দর ডিজাইন করা ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট তৈরি করা যায়।
কত টাকা খরচ হবে ওয়েবসাইট তৈরি করতে?
ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য কোনো টাকা খরচ করার প্রয়োজন হবেনা। সম্পূর্ণ ফ্রি-তে একটা সুন্দর সাইট তৈরি করা যাবে। যেহেতু একটা সাইট তৈরি করতে ডোমেইন, হোস্টিং ও থিম বাধ্যতামূলক প্রয়োজন হয়। সুতরাং আজকে আমরা এই তিনটি মৌলিক ফ্রি-তে ব্যবহার করে কাজ করবো।
ফ্রি-তে একটা পরিপূর্ণ ওয়েবসাইট তৈরি করার পরে। এটাকে মাস্টার ডোমেইনে পরিবর্তন করার পদ্ধতি আপনাদের বলে দেব। যাদের ইচ্ছে হবে তারাই একটা মাস্টার ডোমেইন ক্রয় করে সেটআপ করতে পারবেন। যারা মাস্টার ডোমেইন ক্রয় করতে পারবেন না। আপনারা ফ্রি ডোমেইন দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না।
ফ্রি ও টপ-লেভেল ডোমেইনের মধ্যে পার্থক্য –
ফ্রি-তে যেটা পাবেন সেটা হচ্ছে একটা গুগলের দেওয়া সাব-ডোমেইন। যেমন – bdbloq.com হচ্ছে একটা টপ-লেভেল বা মাস্টার ডোমেইন। আমরা যদি গুগলের ব্লগস্পট দিয়ে bdbloq ডোমেইন নামটি ব্যবহার করে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করি। তাহলে আমাদের সাইটের ইউআরল bdbloq.com এর পরিবর্তে bdbloq.blogspot.com হবে। মানে এক্ষেত্রে Blogspot নামটা অতিরিক্ত ব্যবহার করতে হবে।
মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি শুরু করা যাক –
প্রথমে Google Chrome ব্রাউজার ব্যবহার করে Blogger লিখে সার্চ করুন অথবা সরাসরি https://www.blogger.com/ লিখে ভিজিট করুন। ভিজিট করার পরে আপনার যদি আগে থেকে কোনো ইমেইল একাউন্ট লগিং করা থাকে, তাহলে আপনাকে সরাসরি ওয়েবসাইট তৈরির ধাপগুলোতে নিয়ে যাবে। আমি মনে করলাম আপনার কোনো ই-মেইল ঠিকানা মোবাইলে লগিং করা নেই। যদি না থাকে, তাহলে আপনি নিচের ছবির মতো দেখতে পাবেন।
উপরের ছবিতে দেখানো নিয়ম অনুযায়ী “Email or phone” লেখা বাক্সটার মধ্যে আপনার ইমেইল ঠিকানাটি লিখুন। এবার “Next” বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে চলে যান।
এখন “Enter your password” লেখা বাক্সের মধ্যে আপনার ইমেইলের সঠিক পাসওয়ার্ডটি লিখুন। পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরে পূর্বের মতো “Next” বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে চলে যান।
এবার আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করার জন্য নিচের ছবিতে একটি বাটন দেখতে পাচ্ছেন। উক্ত বাটন এর উপরে ক্লিক করুন। CREATE YOUR BLOG বাটনে ক্লিক করার পরে আপনি পরবর্তী ধাপে চলে যাবেন।
“Title” লেখা বাক্সটার মধ্যে আপনার নিজের পছন্দের একটা নাম লিখুন। এখানে যে নামটি ব্যবহার করবেন। সেই নামটা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করলে উপরে দেখা যাবে। আমি আপনাদের বুঝানোর জন্য BDBloq ব্যবহার করলাম। এবার “Next” বাটনে ক্লিক করুন।
টাইটেল কি?
টাইটেল হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের নাম। যেমন আমাদের ওয়েবসাইটের নাম হচ্ছে BDBloq। আপনি যে নামটা টাইটেলে ব্যবহার করবেন, সেটা হবে আপনার ওয়েবসাইটের নাম।
এবার “Address” লেখা খালি ঘরে আমার মতো করে একটা URL যুক্ত করুন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটার মাধ্যমে সবাই আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করবে। এখানে আমি bdbloq নামটাকে URL হিসেবে যুক্ত করেছি। অনেক সময় ইউআরএলটি যদি অন্য কেউ ব্যবহার করে থাকে, তাহলে আপনি ঐ ইউআরএলটি ব্যবহার করতে পারবেন না। নিচে ছোট করে “This blog address is available” লেখা আসলে আপনার দেওয়া ইউআরএল ব্যবহার করা যাবে।
যদি আপনার ব্যবহার করা URL ব্যবহার করা না যায়, তাহলে উক্ত নামের সাথে কোনো সংখ্যা বা অতিরিক্ত কিছু যুক্ত করতে পারবেন। যেমন – bdbloq71 অথবা bdbloq-pro ইত্যাদি যুক্ত করা যাবে। যুক্ত করার পরে আবার “NEXT”
Display name এর বাক্সে এমন একটা নাম দেন। যেন আপনি আপনার পাঠকদের দেখা চান। এখানে আপনি নিজের নামও ব্যবহার করতে পারবেন। নামটা দেওয়ার পরে “FINISH” লেখাতে ক্লিক করুন। অভিনন্দন! ফাইনালি আপনি মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলেছেন। আজকে বুঝতে পেরেছেন ওয়েবসাইট তৈরি করা কত সহজ। তো এখন আপনার ওয়েবসাইটটা একবার ভিজিট করে দেখা যাক। সাইটটির ডিজাইন কেমন হয়েছে তা জানার জন্য।
ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে View blog লেখাতে ক্লিক করুন। তো আর দেরি কেন? আমি ক্লিক করে দেখলাম। আপনিও করেন, তাহলে নিচের ছবির মতো দেখতে পাবেন।
ডিজাইনটা কি দেখতে খুব বেশি খারাপ লাগছে?
যদি আপনি ওয়েবসাইটটা নিজের পছন্দ মতো কিভাবে ডিজাইন করে তা জানতে চান, তাহলে নিচের কমেন্ট বাক্সে গিয়ে লিখে জানান। আপনার ওয়েবসাইটে আপনি কি কি রাখতে চান এবং ডিজাইন কেমন হলে আপনার ভালো লাগবে তা জানান। পরবর্তীতে সেই কাজগুলো আপনাদের জন্য করে দেখানো হবে।
নতুন একটা ফ্রি বা পেইড কাস্টম থিম কিভাবে আপলোড করবেন। পাশাপাশি নতুন থিম দিয়ে কিভাবে সাইটটি আপনার মতো করে ডিজাইন করবেন। সবকিছু আপনাদের স্টেপ বাই স্টেপ দেখানো হবে। উপরের ছবিতে There’s nothing here! একটা লেখা দেখতে পাচ্ছেন। যেহেতু আপনার ওয়েবসাইট এখনও কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও আপলোড করা হয়নি। তাই এই লেখাটি দেখানো হচ্ছে।
চলুন, সাইটে একটা লেখা পোস্ট করি –
নতুন একটা পোস্ট করার জন্য + চিহ্নের উপর ক্লিক করুন। নতুন একটা পেইজ খুলবে।
এখানে প্রথমে একটা পোস্ট টাইটেল যুক্ত করুন। এরপর টাইটেলের সাথে সম্পর্ক যুক্ত বিস্তারিত তথ্য লিখুন। প্রয়োজন অনুসারে ইচ্ছে মতো ছবি ও ভিডিও যুক্ত করুন।
আমি আমার প্রথম পোস্ট করার জন্য রেডি করলাম। এখানে আমি বেশি কোনোকিছু লেখেনি। যেহেতু আমি আপনাদের ডেমো হিসেবে দেখাচ্ছি। তাই আমি অতিরিক্ত কিছু লিখে সময় নষ্ট করলাম না। সবকিছু লেখা শেষ হলে উপরের এ্যারো চিহ্নের উপর ক্লিক করে পোস্ট করুন।ওয়াউ!!!
আপনার ওয়েবসাইট আবার ভিজিট করুন, তাহলে পোস্টটা নিচের মতো দেখাবে।
আপনি খুশি তো? আপনার একটা ওয়েবসাইট খুব সহজে তৈরি হয়ে গেলো। আপনার একটু আনন্দ হচ্ছে আমাদের আনন্দ। আমরা বলেছিলাম। মোবাইল দিয়ে তৈরি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয় করার বিষয়টা। আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।
মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করে কিভাবে আয় করা যায়?
চলুন, এখন আপনার তৈরি করা সাইটের মাধ্যমে আয় করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। ডিটেইলসে আলোচনা করবো না। সিম্পল কিছু স্টেপ আপনাদের বলে দেব। এগুলো অনুসরণ করলে হবে। প্রয়োজন হলে ডিটেইলসে একটা লেখা প্রকাশ করার জন্য আমাকে কমেন্ট করে জানান। ইতিমধ্যে ওয়েবসাইট থেকে আয় করার অনেকগুলো আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়েছে। আপনারা যারা ইনকাম করতে আগ্রহী, তারা সবাই আগের কিছু ব্লগ পোস্ট পড়ুন।
অনেকগুলো পদ্ধতি ব্যবহার করে একাধিকভাবে একটা ওয়েবসাইট থেকে আয় করা যায়। আজকে গুগল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কিভাবে আয় করার জন্য। ওয়েবসাইটটি উপযোগী করে তুলবেন তা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
গুগল এডসেন্সের জন্য উপযোগী করার সিক্রেট –
- আপনার তৈরি কৃত সাইটে সপ্তাহে কমপক্ষে ২টি বা ৩টি করে পোস্ট করুন।
- সবগুলো পোস্টে কমপক্ষে ৭০০ শব্দ লিখুন। ৭০০ শব্দের কম না লেখার অনুরোধ করছি।
- সপ্তাহে কমপক্ষে ২টি বা ৩টি পোস্ট করবেন। এর থেকে যতবেশি করতে পারেন ততই ভালো।
- পোস্ট করার জন্য কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অন্য কারো ওয়েবসাইট থেকে কপি করবেন না। প্রয়োজনে স্টক ইমেজ ব্যবহার করুন।
- এইভাবে ৬ মাস একটিভ কাজ করুন।
যেহেতু আপনি ফ্রি ওয়েবসাইট দিয়ে অনলাইন থেকে অর্থোপার্জন করবেন। সুতরাং আপনাকে এটা থেকে আয় করার জন্য গুগলের নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত আপনার কাজের একটিভি ভালো রাখতে হবে। উপরের দেওয়া নির্দেশনা গুলো যে পূরণ করবেন। তিনি অবশ্যই আয় করতে পারবেন।
উপরের দেওয়া শর্তগুলো পূরণ হলে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন। আমাকে ফেসবুকে বা WhatsApp এ মেসেজ পাঠাবেন। আমি আমি আপনাকে বাকি কাজগুলো করতে সাহায্য করবো। প্রয়োজনে সবার জন্য ভিডিও টিউটোরিয়াল বা আর্টিকেল প্রকাশ করবো। যদি ইনকাম করতে চান, আগামী ৬ মাস কাজ করে যান। সবাই ভালো থাকবেন।
আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চাই
ফেসবুকে মেসেজ করুন।