এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে যারা কাজ করতে চান, তাদের জন্য প্রথমত বেশি জটিলতা তৈরি হয় এফিলিয়েট মার্কেটিং নিশ আইডিয়া সিলেকশন নিয়ে। আসলে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সফলতার জন্য একটি সঠিক বিষয় নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিষয় নির্বাচনের কাজটা যারা দক্ষতার সাথে করতে পারেন, তাদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সফলতা অনিবার্য হয়ে যায়। আজকের নিস আইডিয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র তাদের জন্য। যারা নতুন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে যাচ্ছেন। যারা ইতিমধ্যে এই সেক্টরে কাজ করছেন, তাদের জন্য এই লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ না।
যারা একদম নতুন এই সেক্টরের মধ্যে কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। তাদের জন্য আজকের নিস আইডিয়া গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমি পাঁচটার নিস আইডিয়া আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এই পাঁচটা বিষয়ের মধ্যে থেকে যে কোন একটা বিষয় নিয়ে আপনি কাজ শুরু করতে পারেন। তবে যে বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করবেন সে বিষয় সম্পর্কে আপনার যেন ভালো থাকে। শুধুমাত্র ভালো একটা বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করলেই হবে না। যে বিষয় নিয়ে কাজ করবেন সে বিষয়ে সম্পর্কে আপনার ভালো জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
সুতরাং আজকের লিখাতে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো এমন কিছু বেস্ট নিশ আইডিয়া। যা নতুনরা কাজে লাগিয়ে খুব দ্রুত এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফল হতে পারবেন। চলুন তাহলে মনোযোগ দিয়ে জেনে নিই এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য ৫টি বেস্ট নিশ আইডিয়া।
নিশ আইডিয়া শেয়ার করার আগে আপনাদের আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বলে দেই। যেকোনো কাজের তৃপ্তি পাওয়ার জন্য প্রথম শর্ত লক্ষ্য স্থির করা। সুতরাং এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্যও আপনাকে আপনার মূল লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। অন্য কারো কাছ থেকে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে দেখে আপনি যদি কাজ শুরু করেন, তাহলে এ সেক্টর আপনি ভালো কাজ করতে পারবেন না। বরং অন্যদের ইনকামের পরিমাণ না দেখে আপনি প্রাথমিকভাবে নিজের জন্য একটা লক্ষ স্থির করেন যে লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে আপনার জন্য জটিলতার কোন বিষয় থাকবে না।
এফিলিয়েট ইনকাম করার জন্য আপনি কোন বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখছেন?
মুনাফা? নাকি
আবেগ?
আপনি যদি শুধু মুনাফা অর্জনের জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন, তাহলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা ৪৫% হবে। এবং আপনি যদি শুধু আবেগের জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন, তাহলেও আপনি সফল হওয়ার সম্ভাবনা ৪৫% হবে। যদি আপনি মুনাফা অর্জন ও আবেগ কে একসাথে করতে পারেন। তবে আপনি অবশ্যই এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফল হতে পারবেন এবং এই ৫টি বেস্ট নিশ আইডিয়া আপনার কাজে লাগবে।
১. এভারগ্রিন এফিলিয়েট মার্কেটিং নিশ আইডিয়া:
সম্পদ।
সম্পর্ক।
কে না চাই পৃথিবীতে একে অন্যের সাথে বন্ধু বন্ধু সম্পর্ক, গালফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড সম্পর্ক, স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক, ইত্যাদি সম্পর্কে জড়াতে? এবং অন্যের থেকে বেশি সম্পদের মালিক হতে কে না চাই? আপনি যদি অর্থনৈতিক শিক্ষা নিয়ে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি মানুষকে শিখাতে পারেন। বর্তমান সময়ে স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটির সকল ছাত্র-ছাত্রী ও যুবক-যুবতীরা। তাদের প্রিয়জনকে গিফট করার জন্য সেরা রিলেশনশিপ বই ও বিভিন্ন ডিজাইনের হ্যান্ডিক্রাফট পণ্যের সন্ধান করে থাকেন।
বেস্ট রিলেশনশিপ বই সম্পর্কে, প্রিয়জনকে গিফট করার অসাধারণ আমাজন হ্যান্ডিক্রাফট সম্পর্কে আপনি অ্যাফিলিয়েট কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। এই অসাধারণ কন্টেন গুলোকে মনিটাইজ করার মাধ্যমে খুব ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। পাশাপাশি কিভাবে বেশি সম্পদ অর্জন করা যায়? বিজনেস শিখার জন্য কোন বইটি সবচেয়ে ভালো? ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ের উপরে আপনি গ্রহণযোগ্য ও প্রয়োজনীয় কনটেন্টগুলো তৈরি করতে পারেন। এবিষয়ে গুগলে খুব বেশি সার্চ করে মানুষ। সুতরাং আপনি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে করতে পারেন এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসা।
২. স্বাস্থ্য ও সুন্দর্য নিশ আইডিয়া:
স্বাস্থ্য।
বিউটি।
ওজন কমানো ও বৃদ্ধি করা।
ওষুধ।
আপনার যদি বিউটি, ওজন কমানো ও বৃদ্ধি করা, ওষুধ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ধারণা ও অভিজ্ঞতা থাকে। তাহলে আপনি বিউটি, ওজন কমানো ও বৃদ্ধি করা, ওষুধ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক নিশ নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। বর্তমানে মানুষ স্বাস্থ্য, সুন্দর্য এবং ওষুধ নিয়ে খুবই সচেতন। সুতরাং আপনি যদি স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করেন, তাহলে খুব দ্রুত সফল হওয়া যাবে।
যেমন: কিভাবে প্রতিদিন সুস্থ থাকা যায়? ভালো ঘুমানোর জন্য কি কি করা প্রয়োজন? ইত্যাদি।
তবে এই বিষয় নিয়ে কাজ করার জন্য আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মানুষের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য হচ্ছে অসাধারণ একটি প্রাকৃতিক আল্লাহর দান। মানুষ তার রূপচর্চার জন্য প্রাকৃতিক বিভিন্ন মেডিসিন ব্যবহার ও গ্রহণ করে থাকেন। যদি কোন রকম মেডিসিন বা পদ্ধতি ব্যবহার করে তাহলে বিপরীত কিছু ঘটে যেতে পারে। সুতরাং আপনি যদি এই বিষয়ের উপরে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
যে সম্পর্কে আপনি ভালো জানবেন সেই সম্পর্কে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে কনটেন্ট আপলোড করবেন। এমন কনটেন্টগুলো আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যেন আপনার পাঠকরা আপনার কনটেন্ট গুলোর উপরে বিশ্বাস করতে পারে। আপনার পাঠকদের বিশ্বাস অর্জন করার মত যদি আপনি কনটেন্ট আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে পারেন। তাহলে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে হাই ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।
৩. বৃত্তবান হওয়ার এফিলিয়েট মার্কেটিং নিশ আইডিয়া –
আর্থিক ম্যানেজমেন্ট।
উদ্যোক্তা।
ইনভেস্টমেন্ট।
আপনি যদি নিজেকে একজন ইকোনমিক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, তাহলে আপনি নিজেকে প্রমাণ করার জন্য শুরু করতে পারেন ইকোনমিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং। বর্তমানে আর্থিক ম্যানেজমেন্ট, উদ্যোক্তা এবং ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে গুগল প্রচুর পরিমাণ খোঁজ করা হয়। নতুন নতুন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীরা এসকল বিষয় জানার জন্য খুবই আগ্রহী হয়ে থাকেন। আপনি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা ও টাকা ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।
আপনাদের প্রশ্ন হতে পারে কি কি ধরনের কনটেন্ট এই বিষয়ের উপরে তৈরি করা যেতে পারে?
আসলে আপনি যখন কাজ শুরু করবেন তখন আপনার টার্গেটের পাঠকদের উপরে নির্ভর করে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করতে পারবেন। মানে আপনি একাধিক বিষয়ের উপরে কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। সবকিছুর জন্য প্রধান শর্ত হচ্ছে প্রথমে শুরু করা। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি শুরু করতে পারেন নি ততক্ষণ পর্যন্ত এই বিষয়ে ভালো বুঝতে পারবেন না এবং আপনার আইডিয়া জেনারেট হবে না। তার মানে বুঝতে পেরেছেন এই বিষয়ে আপনার আইডিয়া জেনারেট করার জন্য প্রথমেই আপনাকে কাজ শুরু করতে হবে।
যারা একদম নতুন। কি বিষয়ের উপরে কনটেন্ট তৈরি করবেন সে সম্পর্কে যদি একদম কোন ধারনা না থাকে। তাহলে নিচে কয়েকটা কনটেন্ট তৈরির আইডিয়া আপনাদের জন্য দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। নিচের বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে আপনি প্রাথমিকভাবে কন্টেন্ট তৈরীর অভিজ্ঞতা পেতে পারেন।
যেমন:
উদ্যোক্তাদের জন্য বেস্ট ৫টি বই।
বেস্ট মানি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার।
ইনভেস্টমেন্ট শিখতে ৩টি অসাধারণ বই, ইত্যাদি।
৪. রিলেশনশিপ এফিলিয়েট মার্কেটিং নিশ আইডিয়া –
কিভাবে একজন ভালো গালফ্রেন্ড সিলেক্ট করবেন?
সু-সম্পর্ক তৈরি করতে শিক্ষনীয় ১০টি বই।
আপনার মনে যদি বাংলাদেশের লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর মত রঙের ছোঁয়া লাগে। তাহলে আপনি রিলেশনশিপ এফিলিয়েট মার্কেটিং নিশ আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে পারেন। কেননা, রিলেশনশিপ প্রত্যেকের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং যারা নতুন রিলেশন করতে যাচ্ছে বা যাদের রিলেশনশিপে ক্ষতি শুরু হয়েছে। তাদেরকে টার্গেট করে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন এই নিশ নিয়ে।
৫. স্পেসিফিক নিশ আইডিয়া –
বেস্ট সফটওয়্যার।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট, ইত্যাদি।
আপনার যদি ডিজিটাল প্রোডাক্ট ও বিভিন্ন ডিজিটাল সার্ভিস নিয়ে অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে আপনি বেস্ট ওয়ার্ডপ্রেস থিম, বেস্টসফটওয়্যার, ডিজিটাল প্রোডাক্ট, ইত্যাদি। এই সকল ক্যাটাগরি নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। আমার দেখা এফিলিয়েট মার্কেটিং কমিশনের মধ্যে ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর এফিলিয়েট ইনকাম বা কমিশন সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। সুতরাং আপনি চাইলে খুব দ্রুত একটা ওয়েবসাইট করে শুরু করতে পারেন নিজের নতুন ক্যারিয়ারের যাত্রা।
আপনার স্বপ্নের ওয়েবসাইট করতে এখানে যোগাযোগ করতে পারেন। বিডি ব্লগের রেফারেন্স ব্যবহার করলে পাবেন কমিশন।
Leave a comment