Amazon Affiliate এর মাধ্যমে আয় করুন মাসে ২৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা
আপনার যদি কোনও ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকে, তবে অর্থ উপার্জন করার জন্য “Amazon Affiliate” একটি কার্যকর উপায়। অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েট নামে পরিচিত। এটি আপনাকে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে একটি বিশেষ লিঙ্ক ব্যবহার করে প্রতিটি একশনের জন্য চার শতাংশ বা তার বেশি আয় করতে সুযোগ দেয়।
“Amazon Affiliate” এর মাধ্যমে কিভাবে অর্থোপার্জন করতে হয় তা জানতে আমার আজকের লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন। আমি আজকে আপনাদের জন্য আমাজনের এফিলিয়েট সম্পর্কে সহজ ভাষায় আলোচনা করবো। প্রতিটি ব্যবসা শুরু করতে কিছু মূলধন ও টুলসের প্রয়োজন হয়। যেহেতু এটি হচ্ছে শতভাগ বিশ্বস্ত উপায় সেহেতু এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন চিন্তা ছাড়া। বিনিয়োগের অর্থ দিয়ে আপনাকে একটা ওয়েবসাইট ও মার্কেটিং করতে হবে।
ওয়েবসাইট তৈরির ধাপটি প্রথমে থাকবে। আপনার যদি একটা ভালো মানে ওয়েবসাইট না থাকে, তাহলে আপনি এফিলিয়েট নিয়ে চিন্তা করবেন না। এটা বলা যত সহজ কাজের ক্ষেত্রে ততটা সহজ নয়। সুতরাং অবহেলিত ইচ্ছে নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করাটা বোকামি।
“Amazon Affiliate” থেকে আয় করতে একটি ওয়েবসাইট/ব্লগ তৈরি করতে হবে:
অ্যামাজনের জন্য তৈরি করা সেরা অ্যাফিলিয়েট ব্লগ সাইট বা ওয়েবসাইটগুলোর ৯৯% নিজস্ব ডোমেইন ও হোস্টিং দিয়ে তৈরি করা হয়, যাতে অ্যামাজনের অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক সহজে যুক্ত করা যায়। এক্ষেত্রে আপনিও কোনো ভালো কোম্পানির কাছ থেকে ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
ভালো ওয়েবসাইট তৈরি করতে ভালো কোম্পানির হোস্টিং সার্ভিসের কোনো বিকল্প নেই। আপনি যদি হোস্টিং সিলেকশন সঠিকভাবে করতে না পারেন, তাহলে অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করুন। আমার বাস্তব জীবনে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি যেসকল হোস্টিং কোম্পানির সার্ভিস ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়ে থাকি। সেই সকল কোম্পানি পুরো বিশ্বের মধ্যে পরিচিত। সুতরাং এসব কোম্পানির কাছ থেকে আপনার চিন্তা ছাড়া হোস্টিং ক্রয় করতে পারবেন।
জনপ্রিয় ৪টি ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি:
- HostGator
- BlueHost
- Namecheap
- IITHost
এসব জনপ্রিয় হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানির ডোমেইন এবং হোস্টিং সার্ভিস আমি নিজে ব্যবহার করছি এবং আমার সকল বন্ধু ও ক্লায়েন্টের জন্য এগুলো পছন্দ করি।
নিম্নলিখিত প্লাটফর্ম ব্যবহার করে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করার বিষয়ে বিবেচনা করুন:
ওয়ার্ডপ্রেস বা অনুরূপ কোনো প্লাটফর্ম ব্যবহার করে একটি অনলাইন ব্লগ তৈরি করুন। আপনি যেহেতু এই ব্লগ সাইটটি টাকা আয় করার জন্য তৈরি করবেন, তাই প্রাথমিক ব্যয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ডিজাইনের জন্য এবং সাইটে প্রয়োজনীয় টুলস যুক্ত করতে কিছু টাকা ব্যয় করুন। এমন কিছু টুলস সাইটে ব্যবহার করুন যা আপনাকে টাকা আয় করতে সাহায্য করবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে সাহায্য করে এমনকিছু টুলস আছে যা নিয়ে পরে বিস্তারিত লিখবো। আপনার ওয়েবসাইটটি অবশ্যই প্রফেশনাল বা ব্যবসায়িক ওয়েবসাইটগুলোর মতো হওয়া প্রয়োজন। যেন amazon affiliate ব্যবহার করতে পারেন।
ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করতে HostGator, Namecheap, Bluehost কোম্পানিগুলোর সেবা ক্রয় করতে চেষ্টা করুন। আপনার যদি বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট পদ্ধতি না থাকে, তাহলে বাংলাদেশি হোস্টিং কোম্পানি iIThost এর সার্ভিস নিতে পারেন।
আপনার ব্লগ বা সাইটের জন্য সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি সেট আপ করুন:
ওয়েবসাইট তৈরি করার পর আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনের র্যাঙ্কিংয়ে উন্নত করতে, এবং আপনার পাঠকরা আপনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো যুক্ত করুণ। আপনার সাইটের ব্যাকলিংক এবং ভিজিটরের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য এটি একটি দুর্দান্ত উপায় হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া।
আপনি বেশি টাকা আয় করতে করতে আপনার সাইটের লেখাগুলো ফেসবুক, টুইটার বা লিংকডইনে পোস্ট করতে পারেন।
ধারাবাহিকভাবে ভালো মানের কন্টেন্ট পোস্ট করুন:
আপনি আপনার কন্টেন্টের মান অনুসারে পাঠককে আকৃষ্ট করতে পারেন, তাই প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একটি করে আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইটে পোস্ট করুন।
“Amazon Affiliate” থেকে আয় করতে ভিজিটরদের মন আকর্ষণ করুণ:
আপনার পোস্ট লিঙ্কগুলিতে লেখার মাধ্যমে আপনি ভিজিটরদের যত বেশি মজা দিতে পারবেন, তত বেশি বিক্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি বছরের সেরা উদ্ভাবনী নতুন পণ্য বা বছরের সেরা নন-ফিকশন বইয়ের জন্য সেরা-ব্লগ পোস্ট লিখে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে পারেন। প্রতিটি পণ্যের অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক যুক্ত করতে ভুলবেন না। মানুষ এই লিঙ্কটি একটি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে পণ্য ক্রয় করার জন্য ভিজিট করবে।
সুতরাং, আপনার লিংকটি ব্যবহার করে যতগুলো পণ্য ক্রয় করবে সবগুলোর জন্য আপনাকে কমিশন দেওয়া হবে।
এবার চালুন জেনে নিই কিভাবে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর জন্য আবেদন করতে হবে:
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর জন্য আবেদন করতে affiliate-program.amazon.com এ যান। সাইন আপ করার আগে সাবধানতার সাথে তথ্যগুলো পড়ুন। কোন অ্যাকাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন করার আগে কোন পণ্যগুলো আপনার জন্য উপযুক্ত? কিভাবে পোস্ট করবেন? এবং কিভাবে আপনার উপার্জিত টাকা আপনাকে প্রদান করবে? তা জানা ও বোঝা উচিত।
Amazon Affiliate Program আপনার প্রতিটি একশন বা বিক্রয়ের জন্য কমিশন দেয় যা পণ্যের ধরণের উপর নির্ভর করে। আপনি প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০টি পণ্য অবশ্যই বিক্রি করতে পারবেন। মাসে ১০টি একশন সংগ্রহ করতে পারলে $১০০ থেকে $২০০ ডলার কমিশন আয় করা সম্ভব। আপনি যদি আমাজনের সকল শর্ত মেনে কাজ শুরু করতে আগ্রহী হোন, তাহলে আপনার নাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যবহার করে রেজিষ্ট্রেশন করুন। রেজিষ্ট্রেশন কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আপনার পেমেন্ট পদ্ধতি যুক্ত করুণ।
মনে রাখবেন, আপনি যে পেমেন্ট পদ্ধতি যুক্ত করবেন তার মাধ্যমে আপনাকে কমিশনের টাকা প্রদান করা হবে। আমাজন অ্যাসোসিয়েটসের সকল ধাপ সম্পন্ন করার পর আপনি আমাজনের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
এখন পালা আপনার ওয়েবসাইটের ভিতরে নিয়মিত কন্টেন্ট পাবলিশ করা এবং অ্যাফিলিয়েট লিঙ্কটি প্রমোট করা।
“Amazon Affiliate” থেকে বেশি আয় করার উপায়:
নিয়মিত পোস্ট করুন এবং সহজ ও তথ্য বহুল পোস্ট লিখুন। প্রতিটি পোস্টের জন্য সময় নিয়ে অন-পেইজ এসইও, অফ-পেইজ এসইও মনোযোগ দিয়ে করুণ। ইনশাআল্লাহ আপনি অবশ্যই অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে মাসে $৩০০ – $১০০০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন। যেটা বাংলাদেশী টাকায় হিসাব করলে হয় ২৫৫০০ থেকে ৮৫,০০০ টাকা।
আপনাদের প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।