সরকারি চাকরি করার সুবিধা অসুবিধা ও চাকরি পাওয়ার টিপস
চাকরি বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা মূল্যবান সম্পদ। বাংলাদেশের মধ্যে চাকরিপ্রার্থী খুবই বেশি কিন্তু এদের মধ্যে অধিকাংশরই স্বপ্ন হচ্ছে সরকারি চাকরি করা। সবাইকে বোঝানো হয়েছে সরকারি চাকরি মানে হচ্ছে জীবন পরিপূর্ণ। এখন এমনকি বাংলাদেশের ছেলে মেয়েদের বিবাহের ক্ষেত্রে অনেক মা-বাবাই সরকারি চাকরির খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। অনেক মা-বাবার স্বপ্ন হচ্ছে, সরকারি চাকরি না পেলে ছেলের বিয়ে দিবেনা।
ঠিক একইভাবে মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি আরও বিশেষভাবে জোরালো। এটি খুবই জঘন্য হলেও বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের ৯০ ভাগেরও বেশি মা-বাবারা, তাদের মেয়ের জন্য সরকারি চাকরি প্রাপ্ত পাত্রের খোঁজ করেন। এজন্য বিশেষ করে ছেলেরা জীবনকে সরকারি চাকরির জন্য শেষ করে দিতে লেগে পড়েন। আহা কতইনা সংগ্রাম সরকারি চাকরির জন্য! শুধুমাত্র সংগ্রাম করলেই হবেনা কিছু কৌশল জানা প্রয়োজন। কোন কিছুতে সফলতা অর্জন করার জন্য পরিশ্রম করার পাশাপাশি কৌশলগুলো আপনাকে এগিয়ে দিতে কাজ করে।
লেখাটি পড়ার জন্য যার কাছে ১০ মিনিট সময় নেই। তার জীবনে সরকারি চাকরি ও নাই। ধৈর্য সবসময়ই ভাল ফলাফল দিয়ে থাকে। তাই ধৈর্য ধরে লিখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ইতিমধ্যে যারা সরকারি চাকরি নিয়ে চিন্তিত তাদের কোনো চিন্তা করার বিষয় নেই। কারন আমরা এই লেখাটিতে শেয়ার করেছি —
- সরকারি চাকরির জন্য কি কি প্রয়োজন?
- কেন সরকারি চাকরি করবেন?
- কেন করবেন না?
- কিভাবে সরকারি চাকরি পাবেন?
- সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য আপনাকে কি কি করতে হবে?
- কোন কোন ওয়েবসাইটের মধ্যে সরকারি চাকরির সন্ধান পাবেন?
সবকিছু বিস্তারিত আমরা এই লেখাতে তুলে ধরবো।
এক কথায় আমরা যেটা বলতে পারি। শুধুমাত্র আজকের এই পেইজের ওয়েবসাইট লিংকটি আপনি সবসময় ভিজিট করবেন। এই লেখাতে আপনি যতগুলো সরকারি চাকরির সার্কুলার প্রকাশিত হয়, সবগুলোর সার্কুলার ও বিজ্ঞপ্তির সাইট লিঙ্ক আমরা এই লেখার মধ্যে আপডেট করতে থাকবো।
কেন সরকারি চাকরি এর আকর্ষণ বেশি?
এক সময় মানুষ সরকারি চাকরির দিকে এত বেশি মনোযোগী না থাকলেও। শেষ কয়েক যুগ ধরে প্রার্থীরা সরকারি চাকরির দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগী হতে শুরু করেছে। কয়েক যুগ মানে বলা যায় দীর্ঘদিন ধরে এই খাতে প্রার্থীদের আগ্রহ বেড়ে চলে আসছে। গবেষকরা বলতে শুরু করেছেন, মূলত সরকারি চাকরির সিকিউরিটির জন্য দেশের নাগরিকরা এক্ষেত্রতে ঝুঁকে পড়ছে।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথভাবে একটি জরিপ পরিচালনা করেন। উক্ত জরিপ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। ৪২ পার্সেন্ট পুরুষ এবং ৫৭ পার্সেন্ট নারীরা সরকারি চাকরির জন্য আগ্রহী। এজন্য পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশের অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রী সরকারি চাকরির দিকে মনোযোগী হয়ে যায়।
সরকারি চাকরি তে কি কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?
সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা বিষয়ে আমরা পরবর্তীতে আরো আলোচনা করবো। আমাদের উচিত গভারমেন্ট জবের পাশাপাশি নিজে কিছু করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। এবং প্রাইভেট কোম্পানি গুলোতে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলা। সত্যি বলতে আমি প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করতে সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কিন্তু আপনি জীবনের মজা উপভোগ করতে পারবেন না।
চেয়ারে বসে মাসে চাকরির বেতন পাওয়া যায়। তার মানে আসলে জীবনের সুখ নয়। যারা প্রকৃত দেশ প্রেমিক তারা নিজের পরিশ্রম দিয়ে কাজ করতে চাই। এবং নিজে কিছু করতে চাই যেটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমাদের কেউ একজন দেশ প্রেমিক হিসেবে একই চিন্তা করতে হবে। যেন নিজেরাই নিজেদের জন্য কিছু করতে পারি।
কারা সরকারি চাকরি পদ গুলোতে নিয়োগ প্রদান করেন?
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রগুলোতে সরকার নিজেই প্রতিটি সেক্টরের জন্য সার্কুলার প্রদান করেন। এবং নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তবে এখানে সবগুলো চাকরির জন্য সরকার নিজেই উপস্থিত থেকে নিয়োগ প্রদান করা সম্ভব নয়। এই ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) প্রাথমিকভাবে প্রথম শ্রেণির ক্যাডার নিয়োগ দেয় এবং পাশাপাশি প্রথম (নন-ক্যাডার) ও দ্বিতীয় শ্রেণির নিয়োগও দিয়ে থাকেন প্রতিষ্ঠানটি।
সরকারি কর্ম কমিশন জানান আগের তুলনায় বর্তমানে সরকারি চাকরির নিয়োগ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অবশ্যই সরকারি কর্ম কমিশন না জানালেও আমরা বাংলাদেশের নাগরিকরা সরাসরি দেখতে পাচ্ছি কতগুলো মানুষ সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত এবং নতুন নতুন সরকারি চাকরির জন্য লড়াই করে যাচ্ছে।
২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সরকারি কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠানটিকে ৩৮৯০ জন নন-ক্যাডার নিয়োগ দিয়েছেন এবং ১৬৩৬৫ জন ক্যাডার নিয়োগ দিয়েছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৮ এরমধ্যে ক্যাডার এবং নন ক্যাডারের সংখ্যা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
আচ্ছা এখন আমরা কতগুলো নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে এই বিষয়গুলো এড়িয়ে যাই আমরা কিভাবে সরকারি চাকরির জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে পারি এখন সরকারি চাকরির সম্পর্কে আমাদের আরো কি কি বিষয় জানা প্রয়োজন তা নিয়ে আমরা আলোচনায় চলে যাচ্ছি।
সরকারি চাকরি এর কী কী সুবিধা রয়েছে?
বিষয়টি যদিও আমরা আগে আলোচনা করেছি। তারপরও বলতে হচ্ছে একটি নিশ্চিত জীবন গড়ার জন্য। সরকারি চাকরির পেতে সবাই প্রতিযোগিতা করে থাকেন। বর্ধমান শিক্ষিত প্রজন্মে তার শিক্ষাজীবন শেষ করতে না করতেই। সরকারি চাকরির জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে শুরু করে দেন।
সরকারি চাকুরির বেতন স্কেল, নতুন নিয়মে বিশেষ করে লোভনীয় গ্রেডিং সিস্টেম, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নিয়োগকৃত প্রার্থীদের শ্রেণীকরণ। অন্যান্য বার্ষিক কর্ম টিপস ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিক ভাতা ও সুবিধাদি বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষিত প্রজন্মদের উক্ত একাধিক আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধাগুলো সরকারি জবের প্রতি এত বেশি আগ্রহী করে তুলেছে।
তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ হচ্ছে। নিজেকে একজন সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু বর্তমান সময়ে দেশের বাজারে সরকারি চাকুরির অনেক মূল্য রয়েছে। সরকারি চাকুরী পাওয়া সোনার হরিন পাওয়ার মতো হয়ে গিয়েছে। ব্যাপক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটি উপযুক্ত চাকরি পাওয়াই দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে আমরা সবাই নিজেদের স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছি। সরকারি যেকোন চাকুরি পাওয়ার আশায় জবের জন্য আগ্রহী প্রার্থীরা ব্যাপক প্রতিযোগীর সম্মুখীন হয়।
সরকারি চাকুরি পদ বিভাগ —
আগের চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত ছিলো সরকারি জবের সকল নিয়ম কানুন। কিন্তু বর্তমানে সেই সকল নিয়ম কানুন গ্রেড এর উপর ভিত্তি করে ২০টি গ্রেট নিয়ে গঠন করা হয়েছে। পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী যারা কর্মকর্তা ছিল, তাদেরকে এখন ১ম থেকে ৯ম গ্রেডে। এবং যারা আগে দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিল। তারা এখন শুধু ১০ম গ্রেডই দ্বিতীয় শ্রেণী। ১১-১৬ তম গ্রেড হল তৃতীয় শ্রেণীর এবং এরপর ১৭-২০ তম গ্রেড হলো সর্বশেষ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা।
প্রথম থেকে নবম নাম্বার গ্রেডে যিনি সে প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা বা গেজেটেড অফিসার বা ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। এদের নিয়োগের সময় সরাসরি সরকারী গেজেট বা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট এদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সামগ্রিক দিক বিবেচনায করলে মান মর্যাদা ও অন্যান্য দায়িত্ব-কর্তব্যের পরিধি এবং একাধিক সুযোগ সুবিধার দিক দিয়ে প্রথম শ্রেনীর গেজেটেড অফিসারগণ তুলনামূলকভাবে অন্যান্য কর্মচারীদের থেকে ভালো অবস্থানে থাকেন।
এদের উপরে রয়েছে সচিব বা মূখ্য সচিব। পিএসসি প্রতিষ্ঠানটি কর্তৃক নিয়োগকৃত ২৭ ধরণের চাকুরিকে ক্যাডার এবং পিএসসি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়োগকৃত অন্যান্য সরকারী চাকুরীকে নন ক্যাডার চাকুরীর আন্ডারে রাখা হয়।
নন ক্যাডার জবের ক্ষেত্রে যদি গ্রেড ৯ম হয়, তাহলে তিনি ১ম শ্রেণী এবং যদি তার গ্রেড ১০ হলে তিনি ২য় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে থাকবেন। ক্যাডার ও নন ক্যাডার এর মধ্যে পার্থক্য কি তা অনেকেই জানতে চাইবেন। আমি জানি এটা অনেকের মধ্যে প্রশ্ন হয়ে বসে আছে। এজন্য এটা নিয়ে একটু ছোট পরিচয় দিয়ে দিচ্ছি।
ক্যাডার এবং নন ক্যাডার জব এর মধ্যে পার্থক্য –
ক্যাডার এবং নন ক্যাডার জব এর মধ্যে মূল পার্থক্য হল, ক্যাডারগণ বিভিন্ন প্রমোশন পেয়ে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সহজে যেতে পারেন, কিন্তু ক্যাডারদের মত নন ক্যাডার গণ যেতে পারেন না। সহজ কথায় প্রায় সব ক্যাডারই কমপক্ষে সর্বচ্চো গ্রেড পর্যন্ত যেতে পারেন, এবং অন্যদিকে নন ক্যাডারদের জন্য বেশির ভাগ পদই ব্লক পোস্টে থাকে।
আমরা অনেকেই বিসিএস ক্যাডারদের কে চীনে থাকি বা বিসিএস ক্যাডারদের নাম অনেক বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে এটা আমরা সব সময় করে থাকি। এক্ষেত্রে আসলে বিসিএস কত প্রকার। চাইলে আপনিও বিসিএস ক্যাডার হতে পারবেন কিনা এই বিষয়ে প্রকারগুলো দেখলেই বুঝে যাবেন আপনার আগ্রহ নিয়ে।
আমরা যে বিসিএস ক্যাডারদের সম্পর্কে শুনে থাকি তারা মূলতঃ দুই প্রকার জেনারেল (পুলিশ, এডমিন, পররাষ্ট্র ইত্যাদি) এবং টেকনিকাল ( শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সড়ক ও জনপদ ইত্যাদি)।
জেনে নেওয়া যাক সরকারি চাকরিতে কোন গ্রেডে কত বেতন ও ভাতা রয়েছে?
সরকারি কর্তকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য সর্বনিম্ন মূল বেতন ধরা হয়েছে ৮ হাজার ২৫০ টাকা এবং এদের মধ্যে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য সর্বোচ্চ বেতন ধরা হয়েছে ৭৮ হাজার টাকা।
২০টি গ্রেডের মাধ্যমে পেশ করা পে-কমিশনের সুপারিশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সেলারির সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৮ হাজার টাকা সুপারিশ করা হলেও, এই স্কেলের আরও অন্যান্য সুযোগে সুবিধা ও বেতন ভাতাসহ তাদের সেলারির অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। একইভাবে যদি সর্বনিম্ন কর্মকর্তাদের বেতন স্কেল ৮ হাজার ২৫০ টাকা হয়, তাহলে তাদের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ও ভাতা সহ সব মিলে দাঁড়াবে ২০ হাজার ১০ টাকা।
প্রথম স্কেলের প্রার্থীদের জন্য বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে সুপারিশ করা হয়েছে তাদের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ বা ৪০ হাজার টাকা। এর পাশাপাশি তাদের জন্য আরও রয়েছে চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, ডোমেস্টিক এইড ভাতা ৩ হাজার টাকা, দুই ঈদ সহ বিভিন্ন উৎসব ভাতা ১৩ হাজার ৩৩ টাকা, আপ্যায়ন ভাতা ৩ হাজার টাকা ও তাদের শিক্ষা ভাতা ২ হাজার টাকা করা হয়েছে।
একইভাবে সর্বনিম্ন স্কেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে সুপারিশ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, আর তাদের চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, অফিস যাতায়াত ভাতা ৩০০ টাকা, তাদের সন্তানের শিক্ষা ভাতা ২ হাজার টাকা, এবং ধোলাই ভাতা ১৫০ টাকা সহ ও টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা ধরা হয়েছে।
চিকিৎসা ভাতা পাবেন? কখন পাবেন?
যারা ইতিমধ্যে অবসরপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের জন্য মাসে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০ টাকা। আবার অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে যাদের বয়স ৬৫ বছরের কম, তাদের জন্য মাসিক ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে যদি আপনার বয়স ৬৫ বছরের বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আপনার জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। মানে আপনার বয়স যদি 65 বছরের উপরে হয় তাহলে আপনি চিকিৎসা বাতা সৌরভ ২ হাজার ৫০০ টাকা পাবেন। এর পাশাপাশি সরকার প্রদত্ত ৪০০ টাকা স্বাস্থ্য ও দূর্ঘটনা বীমা এবং জীবন বীমাসহ সরকারি চাকুরিজীবীর জন্য বীমা স্কিম চালু করা।
এই লেখাতে আমরা পরবর্তী অনেকগুলো ভাতা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা শুরুতে বলেছিলাম এই পেজটি আমরা নিয়মিত আপডেট করব এবং এই পেজ এর মধ্যেই আমরা সরকারের বিভিন্ন চাকরির যুক্ত করে থাকবো। যাতায়াত ভাতা, গাড়ি ব্যবহারের সুবিধা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, টিফিন ভাতা, এছাড়াও আরও অনেক ধরনের বাধা রয়েছে যে সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে তারা বাহিক আলোচনা করতে চেষ্টা করব।
সরকারি চাকরি আইন সম্পর্কে জেনে নিন:
যে কোন চাকরির ক্ষেত্রে কোম্পানির পলিসি এবং বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে নেওয়া মৌলিক বিষয়। অনুরূপভাবে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও আপনাকে সরকারের বিভিন্ন প্রজেক্ট এর পলিসি এবং কার্যনীতি অনুযায়ী আপনাকে সবকিছুই বুঝতে হবে এবং জানতে হবে। অনেকেই সরকারি চাকরি মানে সুখে জীবন, অপেক্ষায় কাটিয়ে দেওয়া, মাসিক বেতন, কোন রকম কাজ না করেই শুধুমাত্র একটা সিগনেচার, এটাকে সরকারি চাকরি মনে করে থাকেন। যখন আপনি রাষ্ট্রীয় কোনো কাজে নিযুক্ত হবেন তাহলে আপনার দায়িত্ব পুরা রাষ্ট্রের জনগণের দায়িত্ব অর্পিত হলো।
আপনি নিজেকে অবহেলা করতে গিয়ে আপনি পুরো জাতিকে তখন অবহেলা করবেন। আমরা যেন রাষ্ট্রীয় সবগুলো নিয়ম-কানুন মেনে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারি এবং রাষ্ট্রীয় চাকরির আইন সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। এজন্য আমাদের সরকারি চাকরি আইন সম্পর্কে পড়াশোনা করতে হবে। সরকারি চাকরি আইন সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ভিজিট করুন।
সে কোন জব এর জন্য আবেদন করার পূর্বে যা জানা প্রয়োজন:
সাধারণত সরকারি চাকরির নামে বাংলাদেশের বেশীরভাগ ব্যবসায়ীরা এটাকে একটি ব্যবসা হিসেবে চালিয়ে নিচ্ছে। মানে চাকরি দেওয়ার নাম বলে অনেকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশের অনেকগুলো সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা। বর্তমান সময়ে কয়েক হাজার টাকার মাধ্যমেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। যেহেতু আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে বসবাস করছি।
সুতরাং একজন সরকারি চাকরি প্রাপ্ত ব্যক্তির অবশ্যই ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে এবং ডিজিটাল ডিভাইস পরিচালনা সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বর্তমানে দুই থেকে তিন হাজারের চেয়েও কম টাকায় যেকোন ওয়েবসাইট তৈরী করে অনেকেই বিভিন্ন জব সার্কুলার প্রকাশ করে, চাকরিপ্রার্থীদের কে বিভিন্নভাবে আকর্ষণ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সুতরাং যখন কোন সার্কুলার প্রকাশিত হবে তখন তাতে আমরা আবেদন করার পূর্বে এটি কতটুকু তা আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
কিভাবে একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সার্কুলার সত্য নাকি মিথ্যা তা চিহ্নিত করবেন?
এটা চিহ্নিত করার প্রধান উপায়টি হচ্ছে সরাসরি সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনটি দেখা। যখন সরকারি কোন চাকরির সার্কুলার প্রকাশিত হয়, তখন অবশ্যই সেই সার্কুলারটি সরকারি কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এইজন্য আপনি শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রথমেই যে ক্যাটাগরিতে সার্কুলার প্রকাশিত হয়েছে উক্ত ক্যাটাগরির উপর সরকারি ওয়েবসাইট ভিজিট করে আপনাকে দেখতে হবে।
যেমন পুলিশের চাকরি হলে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পুলিশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। আর্মির চাকরির জন্য আবেদন করতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আর্মির ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। এবং বিশেষ করে সরকারি আবেদনের ক্ষেত্রে সবগুলো আবেদন অনলাইনে পেমেন্ট করার জন্য টেলিটক সিম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনার সরকারি সার্কুলারটির জন্য ব্যবহৃত নাম্বারটি যাচাই করে নিতে হবে।
চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এমন কিছু বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট লিস্ট:
- https://bangladesh.gov.bd/site/view/job_category/
- http://www.dhakadiv.gov.bd
- https://mopa.gov.bd/site/notification_circular/
- http://bbs.portal.gov.bd/
এখানে আমরা কয়েকটি ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করেছি। তবে আমরা নিয়মিত এখানে অনেকগুলো ওয়েবসাইট লিংক যুক্ত করতে থাকব।
সরকারি চাকরি পেতে কিছু সাধারণ টিপস:
এখানে আমরা কিছু টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। এগুলো এমন নয় যে শুধুমাত্র সরকারি চাকরির জন্য আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। মানুষের জন্য শিক্ষার কোন শেষ নেই। দোলনা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ শিক্ষা অর্জন করে থাকে। প্রয়োজন অনুযায়ী এখানে আমরা বিভিন্ন টিপস পরিবর্তন করতে পারি অথবা আরো নতুন নতুন টিপস এখানে যুক্ত করতে পারি।
আমরা সব সময় যেহেতু আমাদের ওয়েব পেজ গুলো আপডেট রাখতে ভালোবাসি। এজন্য আমাদের ওয়েব পেজ গুলোতে আপনাদের মনোযোগ বৃদ্ধি করতে আমরা বারবার পরবর্তী সংস্করণ এর বিষয়টি আপনাদের নোটিশ করি।
উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানটি নির্বাচন করুন।
আমাদের মধ্যে অনেকেই যে ভুলটি প্রধানত করে থাকি সেটা হচ্ছে উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানঃ নির্বাচন করতে না পারা। আপনি শুধু শুধু সরকারি চাকরি সরকারি চাকরি করলে আপনি কিন্তু সরকারি চাকরি পেয়ে যাবেন না। আপনাকে অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোতে হবে। ঠিক সেই লক্ষটি পূরণ করার জন্য আপনাকে আপনার জন্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে।
আপনি যদি একাধিক ক্যাটাগরিতে লক্ষ স্থাপন করেন, তাহলে কোনো না কোনো সময় হয়ত একটাতে আপনি চাকরি পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু তাতে আপনি নিজের আনন্দের সাথে জীবন কাটাতে পারবেন না। এজন্য আপনি কোন সেক্টরে এবং কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে চাচ্ছেন তা নির্বাচন করে। উক্ত নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত আবেদন করুন। এবং চেষ্টা চালিয়ে যান। এক্ষেত্রে আপনার জব পাওয়ার পসিবিলিটি অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।
আপনি কোন ধরনের চাকরি করবেন তার একটি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন:
এই টিপসটি আমাদের প্রথম টেস্টের মতই তবে এক্ষেত্রে একটু আমরা ভিন্ন মতামত ও আপনাকে জানাব। উপরে উল্লেখ করেছি আপনার প্রতিষ্ঠান সিলেক্ট করার জন্য কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে চাকরির ধরন নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। মনে করুন আপনি জাতীয় কোন কাজ করতে পারেন না।
এক্ষেত্রে আপনি যদি সরকারি চাকরি বলে বাড়ি ওজন নিয়ে কাজ করতে হয় এমন কোন চাকরিতে জয়েন করেন, তাতে আপনি বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না। হয়তো আপনাকে চাকরি থাকতে হবে, না হয় আপনাকে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে। এজন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কোন ধরনের চাকরি করতে ভালোবাসেন এবং আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কোন ধরনের চাকরি উপযুক্ত সে বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
জ্ঞান আহরণের যথেষ্ট পরিমাণ সময় ব্যয় করুন:
সরকারি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক একটি ক্ষেত্র। এখানে আপনাকে টিকে থাকার জন্য হাজার হাজার প্রার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় হাই স্কুল প্রার্থীর জন্য আবেদনের স্থানে অনেক মাস্টার্স ও ডিগ্রিধারী প্রার্থীরাও আবেদন করে থাকে। তারমানে এরা কিন্তু আপনার প্রতিযোগিতাকে আরো বেশী কঠিন করে দিল। এক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য আপনাকে নিয়মিত জ্ঞান আহরণের জন্য যথেষ্ট সময় ব্যয় করতে হবে।
বিশেষ করে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে খুব কম সময়ে গঠিত বিভিন্ন ঘটনা ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস ও গঠন সম্পর্কে আপনাকে বিশেষভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। রাষ্ট্রের সাথে অন্য রাষ্ট্রের যে ছবিগুলো হয়ে থাকে সেগুলো সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান আপনাকে অর্জন করতে হবে। কেননা এ ধরনের প্রশ্ন গুলো সাধারণত সরকারি জবের ক্ষেত্রে বেশি করা হয়ে থাকে।
প্রতিটি ইন্টারভিউ তে অংশগ্রহণ করুন:
এমন নয় যে আপনি ইন্টারভিউ তে অংশগ্রহণ করেছেন এবং প্রথম অংশগ্রহণে আপনাকে চাকরি পেয়ে যেতে হবে। প্রতিটি নতুন নতুন ইন্টারভিউ আপনার জন্য নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজ করবে। এজন্য আপনাকে যেকোনো ইন্টারভিউ তে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে। ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণ আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিবে এবং পরবর্তী ইন্টারভিউতে কিভাবে আপনি নিজেকে প্রেজেন্ট করবেন সে সম্পর্কে অনেক বড় ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
সরকারি চাকরি পাওয়ার প্রধান একটি কৌশল হচ্ছে ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণ করা। এভাবে নিয়মিত কয়েকটি ইন্টারভিউতে আপনি অংশগ্রহণ করলে দেখবেন পরবর্তী ইন্টারভিউতে যে প্রশ্নগুলো করা হচ্ছে সে প্রশ্নগুলো আপনার জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে।
অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীদের খোঁজখবর রাখুন:
আপনার বন্ধু বান্ধব যারা আপনার মতো সরকারি চাকরিতে অংশগ্রহণ করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে, তাদের সাথে নিয়মিত আড্ডা দিতে সময় ব্যয় করুন। অবশ্যই আপনার আড্ডাটা কাজের হওয়া প্রয়োজন। আলোচনা করুন, তারা ইন্টারভিউ তে কি ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে? এবং কিভাবে প্রশ্নটির উত্তর প্রদান করেছে? এতে করে আপনি তাদের কাছ থেকে অনেকগুলো প্রশ্ন শিখে ফেলতে পারবেন। যে প্রশ্নগুলো পরবর্তী হয়ত আপনি শিখে ফেলার কারণে খুব সহজেই উত্তর দিতে পারবেন।
একটি সুন্দর সিভি তৈরি করুন:
এটি আসলে সবার জন্য একটি মৌলিক কাজ। আপনার সিভির উপরে নির্ভর করে আপনাকে অনেকে পরিমাপ করে ফেলে। যেহেতু আপনার সিভি আপনাকে প্রেজেন্ট করে, সেহেতু আপনার সিভিটি অবশ্যই প্রফেশনাল এবং তথ্যবহুল হওয়া আবশ্যক। অনেকেই একবার একটা সিভি তৈরি করার পর প্রতিটি চাকরিতে একই ছবি বারবার সাবমিট করতে থাকে। এটা সত্যি মারাত্মক একটা বল এই ভুলটি কখনো করা যাবে না। এমনকি অন্য কারো ছবি নিয়ে তাতে সংশোধন করে ব্যবহার করার চেষ্টা না করে নিজের জন্য ব্যক্তিগত প্রফেশনাল রিজুমি তৈরি করে ফেলুন।