1 min read

ডাটা এন্ট্রি দিয়ে গড়ে তুলুন স্বপ্নের ক্যারিয়ার

ডাটা এন্ট্রি এমন একটি কাজ, যে কাজটি শিখলে আপনি অফিস-আদালত, ব্যাংক, শিক্ষকতা, অনলাইনে অফলাইনে, ফ্রিল্যান্সিং সব কিছু করা সম্ভব। তাই “ডাটা এন্ট্রি দিয়ে গড়ে তুলুন স্বপ্নের ক্যারিয়ার” কিভাবে? কেন? এসব সবার জানা দরকার মনে করে লিখা।

আপনি যদি মোবাইল, ল্যাপটপ বা ডেক্সটপে শুধু টাইপিং ছাড়া আর কিছু করতে না পারেন। আপনার যদি আর কোনো অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে বলবো আপনি ডাটা এন্ট্রি শিখুন। শুধু ডাটা এন্ট্রি দিয়ে গড়ে তুলুন স্বপ্নের ক্যারিয়ার।

আগে পরিচয় হয়ে নিই ডাটা এন্ট্রির সাথে।

ডাটা এন্ট্রি কি?

ডাটা এন্ট্রি শব্দের মানে হলো তথ্য প্রবেশ করানো। একদম সহজ করে বলছি, ধরুন কোনো কোম্পানি আপনাকে কয়েকটি অডিও রেকর্ড দিলেন, আপনার কাজ হলো রেকর্ডটি শুনে শুনে সেটা লিখে কোম্পানিকে জমা দেওয়া।

অথবা, ধরুন আপনাকে কয়েকটি হ্যান্ড নোটেট ছবি পাঠালেন, আপনার কাজ হলো সেগুলো দেখে দেখে টাইপ করা।

এটাই হলো মূলত ডাটা এন্ট্রি।  ডাটা এন্ট্রি এর সাথে আপনি পরিচয় না হলেও এতক্ষণে বুঝে গেছেন আপনি ইতোমধ্যে জীবনে অনেক ডাটা এন্ট্রি করেছেন।

পরীক্ষায় অন্যজন থেকে দেখে দেখে নিজের খাতায় যে উত্তর এন্ট্রি করছেন।এটাও এক ধরনের ডাটা এন্ট্রি।  মজা করে বললাম এটা সিরিয়াসভাবে নিয়েন না।

ডাটা এন্ট্রি কত প্রকার ?

অনলাইন বা অফলাইনে বেশ কয়েক রকমের ডাটা এন্ট্রি কাজ পাওয়া যায়।
যেমন:

MS Excel data entry,
Spelling checking,
Paper documentation,
Job posting,
Translation,
Data conversion,
Database creation ইত্যাদি ।

ডাটা এন্ট্রি কাজ কিভাবে শিখবেন?

ডাটা এন্ট্রি আপনার এলাকার আশে পাশে যে কোনো একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে শিখে নিতে পারেন।

এছাড়াও আপনি  Youtube  এর সাহায্যে অনেক ভালো একটা ধারনা নিতে পারেন।

আপনি চাইলে অনলাইনে অনেক প্রতিষ্ঠান পাবেন। যেগুলো সম্পূর্ণ ফ্রী তে বিভিন্ন কোর্স করান। আপনি চাইলে এখান থেকে ডাটা এন্ট্রি কোর্সটি সম্পূর্ণ ফ্রি করতে পারেন।

কাজ কোথায় পাবেন?

আপনি ডাটা এন্ট্রি জব ( Data entry jobs)  লিখে সার্চ করুন গুগলে,  হাজারটা ডাটা এন্ট্রি জব চলে আসবে। এখান থেকে আপনি যে অনলাইন অফলাইন বাছাই করতে পারবেন।

অফিসে কাজ করতে চাইলে অবশ্যই কিছু ইন্টারভিউ নিবে। অনলাইনে এই ঝামেলাটা অনেক কম।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনি কয়েকটি মার্কেট প্লেসে একাউন্ট করে নিয়ে পারেন।  যেমন:

সাধারণত ডাটা এন্ট্রি জব গুলো যেমন হয়ে থাকে:

১। পিডিএফ থেকে তথ্য:

আপনাকে হয় তো পিডিএফ।  পিডিএফ থেকে আপনাকে ডাটা গুলো এন্ট্রি করতে হবে। এটা হ্যান্ড নোটও হতে পারে।

২। জিমেইল আইডি :

আপনাকে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে জিমেইল আইডি সংগ্রহ করে দিতে হবে। 

অথবা কোম্পানি বা বায়ার জিমেইল আইডি দিবেন, আপনাকে জিমেইল গুলোতে মেইল পাঠাতে হবে।

অথবা কোনো কোনো সময় তাদের মেইল থেকে বিভিন্ন ডাটা কালেকশন করতে হয়।

৩। জিমেইল কালেকশন :

মনে করুন, আপনাকে কোনো একটি মেডিসিন কোম্পানি হায়ার করলেন।

এবার আপনার কাজ হলো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কাজে যারা জড়িত তাদের জিমেইল আইডিগুলো কালেকশন করা।

হতে পারে ২/৩/৫ হাজার আইডি খুঁজে দিতে বললেন।

এগুলো আপনি সোসাল মিডিয়াগুকে কাজে লাগিয়ে বের করতে পারবেন।

যেমন: ইউটিউবে হাজার হাজার মানুষ কমেন্ট করেন, আলাদা আলাদা জিমেইল থাকে। আমি উদাহরণ স্বরুপ এটি উল্লেখ করলাম।

৪। ভার্সুয়াল সহযোগী :

ভার্সুয়ালি কাউকে সহযোগিতা করা।  এমনও হতে পারে।

৫।  প্রেজেন্টেশন রেডি করা:

MS word, MS Excel, MS power point এগুলোর মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন তৈরি করা। এই কাজটা আপনাকে কিছু দিন সময় দিয়ে (১ সপ্তাহ থেকে ১ মাস) শিখতে হবে। 

সাধারণত উপরে উল্লিখিত কাজগুলোই অনলাইনে বা অনলাইনে বেশি পাওয়া যায়।

আপনাকে আবার সব জানতে হবে এমনও না। এগুলো ডাটা এন্ট্রির এক একটা বিভাগ। এখান থেকে আপনি যে কোনো একটি কাজ দিয়ে অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি দিয়ে স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

পরির্পূণ ডাটা এন্ট্রি শিখতে কতদিন সময় লাগবে?

পরিপূর্ণ ডাটা এন্ট্রি শিখতে কতদিন বা কত মাস সময় লাগবে এটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে। তবে সচারাচর দৈনিক ২/৩ ঘণ্টা সময় দিয়ে শিখলে ১ মাস আপনার জন্য যথেষ্ট হবে।

ডাটা এন্ট্রি কাজের সুবিধা-অসুবিধা:

প্রতিটি কাজের সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে।  অনেক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি আপনাকে অসুবিধার কথা কম বলতে চাইবে, অথবা বলতেও চাইবেন না।

আমি আজ ২ টা আপনাকে জানাবো। আগে সুবিধাগুললো জেনে রাখুন।

সুবিধা সমূহ:

১। বেসিক কম্পিউটার জ্ঞান আর শুধু ইংরেজি ভালো টাপিং করতে পারলেই যথেষ্ট। 

২। আপনাকে প্রায় সব কাজই দেখে দেখে টাইপ করতে হবে। সুতারাং এখানে বেশি কিছু জানার প্রয়োজন পড়ে না।

৩। টেনশন ফ্রী কাজ করা যায়। দেখে দেখে টাইপ করাতে এখানে কোনো কিছুর চাপ নেই।

৪। প্রথম দিক থেকে আপনি ভালো সার্ভিস দিতে পারলে, শুধু একজন বায়ারের কাজ দিয়ে আপনি যথেষ্ট আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবেন।

ডাটা এন্ট্রি কাজের অসুবিধা :

১। হাই কম্পিটিশন :

ডাটা এন্ট্রি কাজটি সবচেয়ে সহজ কাজগুলোর একটি। তাই নতুনরা অনলাইন ক্যারিয়ারের জন্য এটা প্রথম বেছে নেয়।

কারণ তারা মনে করেন, ১ম মাসে শিখে  ২য় মাস থেকে আয় করবো। এমন কি বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং শেখায়।

তারা কোর্স চলাকালীন শিক্ষার্থীদের ইনকাম ধরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রথমে ডাটা এন্ট্রি শেখায়।

২। অল্প আয়:

ডাটা এন্ট্রি কাজটি সহজ কাজগুলোর একটি। যার ফলে, কোম্পানি বা বায়ারা অল্প কিছু ডলার পেমেন্ট করেন। এখানে ১০০ ডলার এর উপর খুব কম কাজ পাওয়া যায়।

৩। দক্ষতার প্রতিফলন কম ঘটে:

এখানে দক্ষতা বলতে শুধু টাইপিং স্পীড ছাড়া আর কিছুই না। নিজের অন্য কোনো দক্ষতার পরিচয় দেওয়ার অপশন কম থাকে।

৪। বিরক্তিকর কাজ:

টানা টাইপিং করতে করতে এক সময় বিরক্ত লাগবে। এক সময় ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করবে।

৫। অতি সর্তকতা থাকা:

ডাটা এন্ট্রি কাজটি অত্যন্ত সর্তকতার সাথে করতে হয়। এখানো বানান, দাঁড়ি,  কমা কোনো কিছুই ভুল করা যাবে না।

পরিশেষে বলবো, ধৈর্য নিয়ে কাজ করুন, মাঝ পথে একেবারেই থেমে যাওয়া যাবে না। ডাটা এন্ট্রি দিয়ে গড়ে তুলুন স্বপ্নের ক্যারিয়ার।

*শূন্য থেকে শুরু করুন অনলাইন ক্যারিয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *