এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো পরির্পূণ গাইড
যারা তাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে আয় করতে চান, তাদের জন্য অনলাইনে অর্থোপার্জন করার এক উপায় হ’ল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে আপনি যেকোনো অ্যাফিলিয়েট করার সুযোগ দেয় এমন কোম্পানির কাছ থেকে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতিমাসে 30k-50k এর বেশি টাকা লাভ বা কমিশন হিসেবে আয় করতে পারবেন। কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের প্রচারের মাধ্যমে আপনি এই কাজটি করে সহজে আয় করতে পারেন।
আপনার ওয়েবসাইটে প্রচার করা পণ্যের লিংকটি ব্যবহার করে কেউ যদি কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করে তাহলে আপনাকে পণ্যের মালিক তার প্রফিটের একটা অংশ আপনাকে দিয়ে দিবে। আপনার মনে হতে পারে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা খুবই কঠিন বিষয়, কিন্তু এটা একদম ভুল ভাবনা। যারা এটি শুরু করেছে তারা এখানে সফল হয়েছে।
কিভাবে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে কাজ করতে পারেন,
চালুন তা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিস্তারিত জানা যাক:
প্রথমে একটি ব্যবসায়িক মডেল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিন:
দুটি প্রাথমিক ব্যবসায়িক মডেল রয়েছে যেগুলোর মধ্যে থেকে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারেন। প্রথমটি হচ্ছে কোনো কোম্পানির সাইটে প্রকাশিত ফিজিক্যাল পণ্যের মার্কেটিং করা এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে কোনো কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে দেওয়া সার্ভিস কে প্রচারের মাধ্যমে আয় করা। আপনি এই দুটি মডেল থেকে যেকোনো একটি মডেল পছন্দ করুন।
কোম্পানির সাইটে প্রকাশিত ফিজিক্যাল পণ্যের মার্কেটিং বলতে বুঝানো হয়:
যেমন: আমাজন, আলিবাবা অথবা ফ্লিপকার্ট এর হয়ে মার্কেটিং করা। এসব কোম্পানি ফিজিক্যাল পণ্য বিক্রি করে থাকে। মোবাইল ফোন, টিভি, ফ্রিজ, কাপড় ইত্যাদি। এদের পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সরাসরি তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখুন।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে কোনো কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে দেওয়া সার্ভিসগুলো প্রচার করা:
অনেকগুলো কোম্পানি আছে যারা ফিজিক্যাল পণ্যের বিজনেস করে না। তারা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সার্ভিস প্রদান করেন। এমনকিছু ওয়েবসাইট হচ্ছে: নেম চিপ, ব্লু হোস্ট এবং থিম ফরেস্ট ইত্যাদি। এখন কথা হচ্ছে আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কি রকম পণ্য বা সেবা নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান? ফিজিক্যাল পণ্য নাকি ডিজিটাল কোনো সার্ভিস নিয়ে করবেন তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
মনেকরি, আপনি একটা মডেল পছন্দ করেছেন। এখন আপনাকে দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ শুরু করতে হবে। আপনার বিজনেস মডেল পছন্দ হওয়ার পর আপনাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের বিজনেস মডেলের উপর নির্ভর করে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করুন:
একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে কাজ করার জন্য, আপনার নিজের প্ল্যাটফর্মের (একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা ব্লগ) প্রয়োজন হবে। যার মাধ্যমে আপনার পছন্দের পণ্য বা পরিষেবাদির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন এবং বিজ্ঞাপন দিবেন।
আপনার যদি ইতিমধ্যে কোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগ থাকে, তাহলে আপনাকে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবেনা। আপনি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে অর্থ উপার্জন শুরু করতে আপনার পুরাতন ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করতে পারেন। আপনার যদি এখনও কোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগ না থাকে, তবে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে হবে।
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করতে নিচের সাইটগুলো ভিজিট করুন:
- HostGator
- BlueHost
- Namecheap
আপনি যদি বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করতে না পারেন, তাহলে নিচের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন:
- IitHost (বাংলাদেশি ডোমেইন ও হোস্টিং কোম্পানি)।
যাইহোক, HostGator, Namecheap এবং Bluehost এর মতো কোম্পানিগুলো এমন ওয়েবসাইট পরিষেবাদি সরবরাহ করে। যা পরিচালনা করা খুবই সহজ এবং অন্যান্য কোম্পানি থেকে অপেক্ষাকৃত সস্তা। তারা প্রফেশনাল ওয়েবসাইট সেবা প্রদান করে। আপনি চাইলে আমাদের মাধ্যমে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যদি আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করা সম্পন্ন হয়ে যায়, তাহলে আপনি পরের নির্দেশনা অনুসরণ করুণ।
একটি নিশ নির্বাচন করুন:
বেশিরভাগ এফিলিয়েট মার্কেটার একটি নিশ নির্বাচন করার ক্ষেত্র ভুল করে। সময় নিয়ে রিসার্চ করে অবশ্যই একটি নিশ নির্বাচন করা প্রয়োজন। নিশ নির্বাচন যত ভালো হবে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে তত বেশি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। এবং নিশ নির্বাচনের পাশাপাশি আপনি পণ্য বা পরিষেবার মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে এমন একটি অঞ্চল খুঁজে বের করতে হবে। যেন আপনি সহজেই মার্কেটিং করে বেশি কমিশন আয় করতে পারেন। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা অঞ্চলকে টার্গেট না করলেও অসুবিধা নেই। তবে একটা নিশ অর্থাৎ বিষয় নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
পণ্য এবং পরিষেবা পছন্দ করুন:
আপনি কোন নিশকে কাজ করার জন্য বেছে নিলে আপনার প্ল্যাটফর্মে প্রচার করতে পারবেন এমন পণ্য এবং পরিষেবাগুলোর সন্ধান শুরু করতে প্রস্তুত। আপনি যে নিশটি পছন্দ করেছেন তার উপর নির্ভর করে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে ওয়েবসাইটে প্রচার করতে যে পণ্যগুলি / পরিষেবাদি পছন্দ করবেন সে বিষয় আপনাকে কন্টেন্ট লিখতে হবে।
ই-বুকস এবং সফ্টওয়্যার এর মতো ডিজিটাল সামগ্রীতে আগ্রহী অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা অ্যামাজন, ক্লিকব্যাঙ্ক এবং ই-জাঙ্কি এর মতো কোম্পানিগুলোর সাথে কাজ করতে পারেন। এতক্ষণ পর্যন্ত যেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা যদি আপনি সঠিকভাবে সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে নিচের নির্দেশনা গুলো পড়ুন। উপরের কাজগুলো সফলভাবে শেষ করার পর আপনি একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আয় করতে প্রস্তুত। তবে আপনার ইনকাম বৃদ্ধি করতে আপনাকে আরও কাজ করতে হবে।
ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বৃদ্ধি করতে হবে:
মনে রাখবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি ৩টি শর্ত পূরণ করতে পারবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত কমিশন আয় করতে পারবেন না।
- ট্রাফিক
- কনভারসন
- অ্যাকশন
এটাকে একটা এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সূত্র বলতে পারেন-
ট্রাফিক + কনভারসন + অ্যাকশন = কমিশন।
এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফল হওয়ার জন্য আরও কিছু জনপ্রিয় পদ্ধতি:
ই-মেইল মার্কেটিং করুন:
ই-মেইল মার্কেটিং খুবই কার্যকর একটা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অনেকবেশি অ্যাফিলিয়েট কমিশন জেনারেট করা সম্ভব। ই-মেইল মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে আপনার টার্গেটেড ক্লায়েন্টের ই-মেইল ঠিকানা গুলো সংগ্রহ করতে হবে। আপনি চাইলে অনেকগুলো আছে যাদের কাছ থেকে ই-মেইল ক্রয় করতে পারেন অথবা কিছু কৌশল অনুসরণ করে ই-মেইল সংগ্রহ করতে পারেন। পরে একদিন ই-মেইল ঠিকানা কিভাবে সংগ্রহ করতে হয় তা নিয়ে লিখবো।
পেইড প্রমোশন করুন:
পেইড প্রমোশন করার জন্য আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে। তবে এটি অবশ্যই কার্যকর একটা উপায়। আপনার ওয়েবসাইট যদি যদি হয়ে থাকে, তাহলে আপনি পেইড প্রমোশন করার মাধ্যমে সাইটে ট্রাফিক বৃদ্ধি করতে পারেন। তবে কখনও ইনকাম করার লোভ নিয়ে সরাসরি এফিলিয়েট লিংকটি প্রমোট করবেন না।
আজকে এপর্যন্ত। আপনাদের যদি এবিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে তা লিখে কমেন্ট করুণ।